গাজরের সমস্ত উপকারিতা এবং সাবধানতা
(গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা)
গাজর আমাদের খুব পরিচিত একটি সবজি। গ্রিক শব্দ ‘ক্যারট-অন‘ থেকে এই “ক্যারট” শব্দের উৎপত্তি। এটা বৈজ্ঞানিক নাম “Daucus carota“। এটি Apiaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একপ্রকার মূল জাতীয় সবজি। গাজরের আদি নিবাস দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপে, কিন্তু বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক গাজরই চীন দেশে উৎপাদন হয়।
গাজর সাধারণত পাঁচটি বর্ণের হয়ে থাকে- সাদা, কমলা, বেগুনি, হলুদ ও লাল। আমরা যত রকমের সবজি খাই, তার মধ্যে দ্বিতীয় জনপ্রিয় সবজি হলো এই গাজর। গাজর অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং আঁশসমৃদ্ধ একটি শীতকালীন সবজি, যেটা এখন প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়।
এটা কাঁচা এবং রান্না দুইভাবেই খাওয়া যায়। পাশাপাশি সালাদ হিসেবেও গাজর খুব জনপ্রিয়। এটি সহজলভ্য হওয়ায় সবাই খাইতেও পারে। গাজর প্রচুর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি সবজি।
তাই আজ আমরা জানবো:
- গাজরের পুষ্টি উপাদান গুলো কি কি?
- গাজরের স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো কি কি?
- গাজর খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি?
- গাজরের জনপ্রিয় কিছু রেসিপি।
- গাজর খাওয়ার সময় কি কি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত, ইত্যাদি।
চালুন তাহলে স্টেপ বাই স্টেপ জানার চেষ্টা করি-
গাজরের পুষ্টি উপাদান
নিচের সরণীতে প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স পরিমাণ) গাজরের পুষ্টি উপাদান দেওয়া হয়েছে-
- নাম – পরিমাণ
- শক্তি – ১৭৩ কিজু (৪১ kcal),
- শর্করা – ৯.৬ g,
- চিনি – ৪.৭ g,
- খাদ্য আশ- ২.৮ g,
- স্নেহ পদার্থ- ০.২৪ g,
- প্রোটিন- ০.৯৩ g,
- ভিটামিন এ সমতুল্য -৮৩৫ μg,
- বিটা-ক্যারোটিন -৮২৮৫ μg,
- লুটিন জিয়াক্সানথিন-২৫৬ μg,
- থায়ামিন (বি১) -০.০৬৬ মিগ্রা,
- রিবোফ্লাভিন (বি২) -০.০৫৮ মিগ্রা,
- নায়াসিন (বি৩)-০.৯৮৩ মিগ্রা,
- প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫) -০.২৭৩ মিগ্রা,
- ভিটামিন বি৬- ০.১৩৮ মিগ্রা,
- ফোলেট (বি৯) -১৯ μg,
- ভিটামিন সি -৫.৯ মিগ্রা,
- ভিটামিন ই -০.৬৬ মিগ্রা,
- ক্যালসিয়াম -৩৩ মিগ্রা,
- লৌহ -০.৩ মিগ্রা,
- ম্যাগনেসিয়াম-১২ মিগ্রা,
- ম্যাঙ্গানিজ-০.১৪৩ মিগ্রা,
- ফসফরাস-৩৫ মিগ্রা,
- পটাসিয়াম-৩২০ মিগ্রা,
- সোডিয়াম-৬৯ মিগ্রা,
- জিংক-০.২৪ মিগ্রা,
- পানি – ৪৪%
এছাড়াও আরো বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে এই গজের মধ্যে। যেগুলো প্রত্যেকটাই মানব স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
গাজরের স্বাস্থ্য উপকারিতা
গাজরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হল এটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আমরা আগেই জেনেছি গাজরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ থাকে। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খুবই কার্যকরী।
পাশাপাশি ভিটামিন ‘সি’ শরীরকে কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরের যেকোনো ধরনের ক্ষত দ্রুত সরে ওঠে। এছাড়াও গাজরের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরের ক্ষতিকর জীবাণু ও ভাইরাসের বিরুদ্ধেও কাজ করে।
বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করেছেন, গাজরে প্রচুর পরিমানে ফাইটোকেমিক্যালস উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিটা ক্যারোটিন ও কিছু ক্যারোটিনয়েড। এই উপাদানগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনকে সক্রিয় করে তোলে, যেটা ক্যান্সারের কোষকে রোধ করতেও সাহায্য করে।
এছাড়া, হজম প্রক্রিয়া শেষে খাদ্যের যে উচ্ছিষ্টাংশ আমাদের শরীরে থেকে যায় সেগুলোকে ফ্রি র্যাডিকেলস বা মৌল বলে। এই ফ্রি র্যাডিকেলস শরীরের কিছু ক্যান্সার বিরোধী কোষকে নষ্ট করে ফেলে।
আর গাজরের মধ্যে থাকা ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ এবং ‘বি-৬’ এই ফ্রি র্যাডিকেল্যসের বিরুদ্ধে কাজ করে, ফলে খুব সহজেই শরীরে ক্যান্সারের কোষ এসে বাসা বাঁধতে পারে না। তাই নিয়মিত গাজর খাইলে স্তন, কোলন ও ফুসফুস ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও গাজর একটি উত্তম খাবার। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা যদি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমানে খায় তাহলে গ্লুকোজ মেটাবলিসম উন্নতি লাভ করে। ফলে খুব দ্রুত ডায়াবেটিস কমতে শুরু করে।
আর ১০০ গ্রাম গাজরে ফাইবার রয়েছে ২.৮ g। এছাড়া, গাজরে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে, যেগুলো কোলেস্টরেল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি এটাতে ক্যালরি এবং সুগারের পরিমাণও খুব কম।
একটি ইঁদুর পরীক্ষা থেকে জানা যায়, গাজর খাইলে শরীরের খারাপ কোলেস্টরেল কমে এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ বাড়তে থাকে। কারণ, কাচা গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, পেক্টিন, লুটিন জিজানথেন এবং প্রচুর ডায়েটরি ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
এই উপাদানগুলো হার্টের ধমনির ওপর কোনো আস্তরণ জমতে দেয় না পাশাপাশি, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ৬টির বেশি গাজর খেয়েছেন তাদের তুলনায় যারা এর থেকে পরিমাণে কম বা একটি গাজর খেয়েছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি ছিল। আবার, গাজরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যেটা হাই ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতেও গাজর বেশ উপকারী। একটি গাজোরে 88% পানি থাকে। এছাড়া আমরা আগেই জেনেছি গাজর ফাইবারের একটি অন্যতম উৎস, এবং ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। তাই গাজর খাইলে পেট ভরা থাকে এবং শরীরে কোন ফ্যাটও জমা হয় না।
যারা অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খুবই উপকারী। আর গাজরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে।
যেগুলো হাড় সুস্থ ও মুজবুত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া গাজরে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েডও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, দাঁতের সুস্থতার জন্যও গাজর বেশ উপকারী। গাজরের মধ্যে থাকা মিনারেল গুলো দাঁতকে সুস্থ ও মুজবুত রাখতে সাহায্য করে।
আবার, গাজরে ভিটামিন ‘সি’ থাকায় মাড়ির সুস্থতা বজায় থাকে। এছাড়া, গাজর খাওয়ার সময় আমাদের মুখে ‘সিলভা’ নামক একটি যৌগের নিঃসরণ ঘটে। এই যৌগটি দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস করে মুখের ভেতর অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেও গাজর বেশ উপকারী। আমরা আগেই জেনেছি গজরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ থাকে। আর এটা প্রমাণিত যে, ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ ত্বক সংক্রান্ত যাবতীয় রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।
এছাড়া, গাজরে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। যেটা ত্বকের টিস্যু মেরামত করতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিকারক বিকিরণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
পাশাপাশি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান গুলো ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, স্কিন টোনকে উন্নত করা এবং ত্বকে দাগ পড়া থেকে রক্ষা করে। এটি চুলের জন্যও অনেক উপকারী।
চুলের জন্য অত্যাবশ্যক ভিটামিন গুলো আছে গাজরের মধ্যে। তাই ঘন, স্বাস্থ্য উজ্জ্বল এবং চকচকে চুল পেতে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন। আবার চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে ভিটামিন ‘এ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
আমরা আগেই জেনেছি গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন লিভারে প্রবেশ করার পর ভিটামিন ‘এ’ তে রূপান্তরিত হয়। এটি পরবর্তীতে চোখের রেটিনায় পৌঁছে দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, এটি চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং চোখকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মা এবং শিশু দুজনের জন্যই গাজর বেশ উপকারী। গর্ভাবস্থায় মায়ের রক্তাল্পতা, পেশির খিঁচুনি, ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যার সমাধানে গাজর বেশ উপকারী। এছাড়া গাজরে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে, যেটা গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের হাড়ের বিকাশে সাহায্য করে।
এছাড়াও, গাজর যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যাদের স্মৃতিশক্তি কম তারাও নিয়মিত কাজের খেতে পারেন। হারভার্ড স্ট্যাডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি কেউ দৈনিক ৫০ গ্রাম বিটা ক্যারোটিন আহার করে, তবে তার মস্তিষ্ক ক্ষয় হ্রাস পায়।
আর আমরা আগেই জেনেছি গাজরে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। এছাড়াও গাজরে আরো অন্যান্য অনেক উপকারিতা রয়েছে।
গাজরের অপকারিতা
আমরা অলরেডি জেনেছি গাজরের উপকারিতা অনেক। তবে এটি মাত্রা অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। কারণ প্রত্যেকটি জিনিসেরই কিছু সাইড ইফেক্ট থাকে। যেমন:
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের মাত্রাতিরিক্ত গাজর রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।প্রচন্ড গরমে বেশি পরিমাণে গাজর খেলে অনিদ্রার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। আমরা জেনেছি, গাজর হল বিটা-ক্যারোটিনের একটি খুব ভালো উৎস।
যেটা আপনার শরীরকে ভিটামিন ‘এ’-এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। কিন্তু আপনি যদি এটি খুব বেশি পরিমাণে খান, তাহলে এটি আপনার শরীরকে বিবর্ণ করে দিতে পারে।
আবার, যেসব মায়েরা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাদের কখনোই মাত্রা অতিরিক্ত গাজর খাওয়া উচিত নয়। কারণ, এটি মায়ের বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তন করে দিতে পারে।
এছাড়াও, যেকোন সবজি বা ফল বেশি পরিমানে খেলে বদ হজম , গ্যাস কিংবা ডাইরিয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গাজর খাওয়ার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
কাঁচা গাজর বেশি উপকারী না-কি রান্না গাজর?
গাজরের পুষ্টিমান নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন না থাকলেও, কাঁচা গাজর না-কি রান্না গাজরের পুষ্টিগুণ বেশি এটা নিয়ে মতো বিরোধ রয়েছে অনেকেরই। গাজর কাঁচা খাওয়া ভালো। তবে রান্না করে খাওয়া আরো ভালো। যদি গাজর রান্না করা বা কাটা হয়, তখন এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে আরো বেশি কাজ করে।
এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, গাজরে বিটা ক্যারোটিন থাকে, যাকে ক্যারোটিনয়েডও বলা হয়। রান্না করা হলে এটা শরীরে আরও ভালোভাবে শোষিত হয়। বিটা ক্যারোটিন একটি প্রোভিটামিন যেটা পরবর্তীতে শরীরে ভিটামিন এ’তে রূপান্তরিত হয়।
এখন প্রশ্ন হল: গাজর কিভাবে রান্না করা উচিত?প্রথমে খুব ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার আপনার সুবিধামতো কাটুন তারপর মাঝারি তাপে ভালোভাবে রান্না করুন। তবে জেনে রাখা ভালো, উচ্চতাপেও গাজরের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না।
এছাড়া, কাঁচা খাইলেও আপনি এটার উপকারিতা পাবেন। কারণ গাজরের নিজস্ব কিছু উপকারিতা রয়েছে, সেটা যে কোন ভাবে খাইলেই পাবেন।
তবে কাঁচা গাজর খাইতে হলে, প্রথমে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে, তারপর ভালো এবং পরিষ্কার ‘কিচেন তোয়াল’ দিয়ে ভালোভাবে মুছে নিন। তারপর একটি ছুরির সাহায্য গাজরের উপরের পাতলা আবরণটা তুলে ফেলুন, এরপর পরিবেশন করুন। এছাড়াও, গাজর টুকরা করে কেটে, কুচি করে বা ভর্তা বানিয়েও খেতে পারেন।
গাজরের রেসিপি
গাজরের সাথে বিভিন্ন উপাদান যোগ করে সুন্দর সুন্দর রেসিপি তৈরি করতে পারেন।গাজরের খুব পপুলার একটি রেসিপি নাম হল ‘গাজরের হালুয়া’ এক কিলোগ্রাম গাজরের হালুয়া তৈরি করতে যে উপকরণ গুলো লাগবে, সেগুলো হলো:
- গাজর – ১ কেজি,
- ঘি – ৫/৬ চা চামচ,
- দুধ – ১/২ লিটার,
- চিনি – ৬ চা চামচ,
- দারচিনি – ২/৩ টা,
- এলাচ- ৭/৮টি,
- বাদাম কুঁচি – ১ টেবিল চামচ,
- খেজুর কুঁচি – ২ টেবিল চামচ এবং
- কিসমিস – ১ টেবিল চামচ,
এবার এটা নিয়মমাফিক প্রস্তুত করতে হবে।
প্রথমে গাজর গুলো কুচি বা গ্রেট করে নিন।
তারপর দুধের মধ্যে এলাচ এবং দারচিনি দিয়ে চুলোয় দিন, যতক্ষণ না ঘন হয় ততক্ষণ ভালোভাবে নাড়তে থাকুন।
এরপর অন্য একটি পাত্রে প্রথমে ঘি গরম করুন তারপর গ্রেট করা গাজর দিয়ে হালকা আছে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভেজে নিন।
গাজর ভাজা হয়ে গেলে এটাতে পরিমাণমতো চিনি এবং ঘন দুধ মিশিয়ে নাড়তে থাকুন।
দুধ শুকাতে শুরু করলে তাতে খেজুর এবং বাদাম কুচি দিয়ে নামিয়ে নিন।
গাজরের হালুয়া তৈরি। এবার আপনি পরিবেশন করতে পারেন। অনেকে এটি গরম খেতে পছন্দ করে আবার অনেকে ঠান্ডা। আপনার যেভাবে পছন্দ আপনি সেভাবেই খাইতে পারেন। এছাড়াও, গাজরের অন্যান্য আরো অনেক মজাদার রেসিপি রয়েছে। যেমন: গাজরের লাড্ডু, গাজরের জুস, গাজরের জর্দা, গাজরের ফিরনি, ইত্যাদি।
সামারি
গাজর যেমন সুস্বাদু তেমনি একটি খুব ভালো স্বাস্থ্য বর্ধক খাদ্য এবং গাজর খাওয়ার উপকারিতাও অনেক। আবার গাজর আপনি আপনার সুবিধামতো যে কোনভাবেই খেতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে, গাজর খাওয়ার সময় অবশ্যই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।