Healthy and nutritious food

শসার অজানা এবং গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

শসার উপকারিতা

বর্তমান সময়ে, সারা বিশ্বে আবাদ হওয়ার দিক থেকে ৪ নম্বরে রয়েছে যে সবজিটি, সেটার নাম হলো শসা। শসা গোর্ড পরিবারের কিউকারবিটাসের অন্তর্গত একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ। শসা প্রকৃতপক্ষে সবজি নয়।

উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সঙ্গানুসারে, শশা একটি ফল। কারণ, এই ফলটি ফুল থেকে হয়, আবার এটার বীজও আছে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, অনেক সবজিই আসলে ফল, যেমন- শুঁটি, ক্যাপ্সিকাম, কুমড়া এমনকি টমেটো ইত্যাদি।

লতানো উদ্ভিদে জন্মানো এই ফলটি লম্বাটে আকৃতির হয় এবং এটি প্রায় দশ থেকে বারো ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এর বাইরের রঙ সবুজ, তবে পাকলে হলুদ হয়ে যায়। শসার বৈজ্ঞানিক নাম ‘Cucumis sa’। রূপচর্চা থেকে শুরু করে মেদ নিয়ন্ত্রণ, সব ধরনের গুণ রয়েছে এই সহজলভ্য ফলের মধ্যে।

তাই চলুন শসার স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি-

শসার উপকারিতা ও অপকারিতা

শসার পুষ্টি গুণ

এক কাপ (১৪২ গ্রাম পরিমাপ) কাটা শসাতে যে পুষ্টি মান পাওয়া যায়-

  • পানি: ১৩৭ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট: ৩.১ গ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম: ১৭ মিলিগ্রাম
  • প্রোটিন: ০.৮ গ্রাম
  • ফসফরাস: ২৯.৮ মিলিগ্রাম
  • ফ্যাট: ০.২ গ্রাম
  • ক্যালোরি: ১৭
  • ভিটামিন কে: ১০.২ এমসিজি
  • বিটাক্যারোটিন: ৪৪ এমসিজি
  • আয়রন: ০.৩ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম: ১৯.৯ গ্রাম
  • ফাইবার: ১.০ গ্রাম
  • ফোলেট: ১৯.৯ এমসিজি
  • ভিটামিন সি: ৪.৫ মিলিগ্রাম
  • পটাসিয়াম: ১৯৩ মিলিগ্রাম

এছাড়াও, শসাতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং লিগানানস নামের একধরনের খুব গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস রয়েছে।

এবার চলুন শসার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি-

শসার উপকারিতা ও অপকারিতা

শসার উপকারিতা

1-ওজন কমাতে সাহায্য করে শশা

ওজন কমানোর খাদ্যতালিকার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল শসা। কারণ, শসায় উচ্চমাত্রায় পানি ও নিম্নমাত্রায় ক্যালরি রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম শসায় মাত্র ১৫ ক্যালরি রয়েছে। পাশাপাশি, এতে কোনো চর্বি বা খারাপ কোলেস্টেরল নেই। তাই, যাঁরা দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য শসা একটি আদর্শ খাবার।

তবে শুধুমাত্র এই শসা খেয়েই ওজন কমানো সম্ভব নয়। তবে, ফ্যাট ফ্রী খাবার ও ব্যায়ামের পাশাপাশি শসা খাইলে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। তাই সালাদ বা তরকারি হিসেবে শসা নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। এছাড়া, কাঁচা শসা হজমের জন্য খুবই উপকারী। আবার, নিয়মিত কাচা শসা চিবিয়ে খাইলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর হয়।

2-হজমে শক্তি বাড়াতে বেশ উপকারী

আমরা জানি, সুস্বাস্থ্যের জন্য হজমশক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই হজম শক্তি বাধাগ্রস্ত হলে বা এটাতে কোন ধরণের সমস্যা দেখা দিলে পুরো দেহই স্থবির হয়ে পড়তে পারে। আর হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে শসা খুবই কার্যকরী একটি খাবার।

কারণ, শসায় যে ভিটামিন, খাদ্য আঁশ এবং পানি থাকে তা হজমে সাহায্য করে। আমরা আগেই জেনেছি নিয়মিত শসা খাইলে পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।

এছাড়া শসার মধ্যে এরেপসিন নামক একধরনের অ্যানজাইম থাকে, এই উপাদানটি দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, গ্যাস্ট্রাইটিস, আলসার এবং অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী শসা।

আবার, শসার সঙ্গে কিছুটা সিস্যাম সিড ও অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খাইতে পারেন। এটা এসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধ করতে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

3-গেঁটে বাত কমাতে সাহায্য করে শসা

আমরা জানি, গেঁটে বাত হচ্ছে একধরনের প্রদাহজনিত রোগ। যখন রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি জমা হয় তখন এই ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। আর রক্ত থেকে যদি এই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা যদি কোমানো যায়, তাহলে গেঁটে বাত ও হাড়ের জোড়ার ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

আর শসায় প্রচুর পরিমাণে সিলিকা নামক এক ধরনের উপাদান থাকে। তাই, গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা আস্তে আস্তে কমে আসে। এতে গেঁটে বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

4-মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে

মাথা ও ঘাড়ের ব্যথাই মূলত মাথা ব্যথা নামে পরিচিত। আরো ভালোভাবে বলা যায়, মস্তিষ্ক ও মাথার হাড়ের আবরণের চারপাশের রক্তনালি, মাথার চামড়ার নিচের মাংসপেশি, সাইনাস, নার্ভ ও তাদের আবরণ, চোখ, কান ও ঘাড়ের মাংসপেশি ইত্যাদির প্রদাহ এবং টানই মূলত মাথা ব্যথা নামে পরিচিত। আর এই মাথাব্যথা কমাতে শসার বেশ কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে।

অনেকেরই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মাথাব্যথা শুরু হয়, সেটা শরীরের অবসাদ থেকে আসে। আর, শশার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি এবং সুগার এই মাথা ব্যথা দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটু শশা খেয়ে নিলে ঘুম থেকে ওঠার পর এই সমস্যা আর থাকবে না। এছাড়াও, শসা অন্যান্য মাথাব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।

5-ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে

বর্তমান বিশ্বে ক্যান্সার একটি মরণ ব্যাধি হিসেবে পরিচিত। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, একটু সচেতনতা এবং দৈনন্দিন খাবারের কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে ৯০ শতাংশ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর ক্যান্সার প্রতিরোধী খাবার হিসাবে শসা অনেক আগে থেকেই পরিচিত।

কারণ,‌ শসায় পিনোরেসিনোল, সিকোইসোলারিসিরেসিনোল এবং ল্যারিসিরেসিনোল নামক এই তিনটি আয়ুর্বেদিক উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো জরায়ু, স্তন ও মূত্রগ্রন্থিসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

6-রূপ চর্চায় বেশ উপকারী একটি উপাদান

স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি শসা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেও দারুণ উপকারী। কারণ, শসায় উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সিলিকন রয়েছে, আর এই উপাদানগুলো ত্বকের পরিচর্যায় অনেক উপকারী। এই জন্য গোসলের সময় রূপচর্চার অংশ হিসাবে শসা ব্যবহার করা হয়।

আবার লক্ষ্য করে দেখবেন, শসা গোল করে কেটে চোখের পাতায় বসিয়ে রাখা হয়। এতে চোখের পাতায় জমে থাকা ময়লা অপসারণ হয়, পাশাপাশি চোখের জ্যোতিও বাড়ে। এছাড়া, শসায় প্রচুর পরিমাণ প্রদাহপ্রতিরোধক উপাদান রয়েছে, এই উপাদানগুলো চোখের ছানি পড়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও, নিয়মিত শসার রস দিয়ে চুল ধৌত করলে চুলের গোড়া মজবুত হয়। শসায় যে সমস্ত ভিটামিন রয়েছে, এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। আবার, শ্যাম্পু ব্যবহার করার সময় এর সাথে শসার রস মিক্স করলে চুল সাইনি হয়।

রেগুলার শসা খেলে ত্বক যেমন হাইড্রেট হয় তেমনি চুল পড়াও বন্ধ হয়। আবার, দাউদ এক্সিমার মতো ত্বকের নানা সমস্যা নিরসনেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে শসা।

7-রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে

রক্ত চলাচলের সময় ধমনীর গায়ে যে চাপ সৃষ্টি হয় তাকে রক্তচাপ বলে। রক্ত চাপের ফলে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, মাথা ঘোরানো, ঘাড় ব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, অস্থির হয়ে শরীর কাঁপতে থাকা, মাঝে মধ্যে কানে শব্দ হওয়া, রাতে ভালো ঘুম না হওয়া, মাথা গরম হয়ে যাওয়া, অল্পতেই রেগে যাওয়া বা অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা যায়। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শসা উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও খুবই উপকারী।

কারণ, শশায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনিসিয়াম, পটাসিয়াম, ভিটামিন সি, সিলিকা ও আঁশপদার্থ রয়েছে। এই উপাদান গুলো শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। মজার ব্যাপার হলো শশা উচ্চ এবং নিম্ন রক্তচাপ দু’ই নিয়ন্ত্রণ করে।

২০১৭ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে সমস্ত বয়স্ক মানুষ 12 দিন নিয়মিত শসার রস পান করেছেন তাদের রক্তচাপ তুলনামূলক ভাবে কমে গেছে। এছাড়া, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যা সমাধানেও বেশ উপকারী শসা।

8-শারীরিক পানি শূন্যতা দূর করতে বেশ উপকারী

শারীরিক পানিশূন্যতার অন্যতম বড় কিছু লক্ষণ হচ্ছে প্রস্রাব কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, গিঁটে ব্যথা, গলা শুকিয়ে আসা, ক্লান্ত লাগা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি ভাব, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

এই লক্ষণ গুলোর যেকোনোটি থেকেই তৈরি হতে পারে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা। আর শসা এই শারীরিক পানিশূন্যতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কারণ, শসার ৯৫ শতাংশই পানি দ্বারা পূর্ণ, আর এই পানি শরীরকে আর্দ্র এবং পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। দুর্বলতা কাটিয়ে দ্রুত শরীরকে সতেজ করে তোলে, ক্লান্তিভাব কমায়। পাশাপাশি, এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতেও খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

9-হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে

হাড় হল যে কোন মেরুদন্ডী প্রাণীর একটি কঠিন অঙ্গ, যেটা কঙ্কাল তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। এই হাড়গুলি দেহের বিভিন্ন অঙ্গকে সুরক্ষা দেয়, পাশাপাশি লোহিত এবং শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি করে। এই জন্য হাড়কে মানুষের বাহ মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ বলা হয়।

একটা নির্দিষ্ট সময় বা বয়সের পর বিভিন্ন কারণে মানুষের হাড়ের শক্তি কমে যেতে থাকে। আর এই হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে শসার গুরুত্ব অনেক।

কারণ, শসাতে আছে ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়াম, আর এই দুই উপাদানই হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন কে হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি কমাতে এবং ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। তাই হাড় ভালো রাখতে নিয়মিত শসা খেতে পারেন।

10-হার্ট ভালো রাখতেও বেশ কার্যকরী

বেশ কয়েকটি গরেষণায় দেখা গেছে, শসা রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী। আর রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে রক্তনালী গুলো ভালো থাকে পাশাপাশি, হার্টের স্নায়ু গুলো সুরক্ষিত থাকে। ফলে, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

এছাড়া, শসাতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন কে। এই উপাদানগুলো হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম গ্রহণের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

নিয়মিত শসা খাইলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে এবং শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়া, ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধা এবং রক্তে ক্যালসিয়াম প্রবাহের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শসাতে থাকা মুক্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। এছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে বাধা দেয় এবং ক্যান্সার ও হৃদরোগ উপশমে সাহায্য করে।

আরও একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শসার খোসায় যে পুষ্টি ও ফাইবার থাকে তা রক্তে শর্করার হ্রাসসহ অনেক ডায়াবেটিস সম্পর্কিত সমস্যাতেও উপকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। তাই খোসাসহ খেতে পারেন এটি।

শসার উপকারিতা

শসার অন্যান্য উপকারিতা

উপরোক্ত উপকারিতা ছাড়াও শসার আরো অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। যেমন: একজন মানুষের শরীরে যে সমস্ত ভিটামিনের প্রয়োজন, তার বেশির ভাগই রয়েছে এই শসার মধ্যে।

আবার, শসায় রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, এই ভিটামিন গুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, শসায় রয়েছে ভিটামিন বি১, বি৫ ও বি৭। এই ভিটামিন গুলো একসাথে স্নায়ুকে শিথিল করার মাধ্যমে, মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

নিয়মিত শসা খাইলে মস্তিষ্কের ধমনীতে জমে থাকা এলডিএল এর মাত্রা হ্রাস পায়, ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। আবার, শসার মধ্যে যে পানি রয়েছে এটা দেহের বর্জ্য ও দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। শসা কিডনিতে সৃষ্ট পাথর গলাতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।‌‌

পাশাপাশি, ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেও বেশ ভালো কাজ করে শসা। এছাড়াও, শসায় রয়েছে স্টেরল নামক এক ধরনের উপাদান, এই উপাদানটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

মজার ব্যাপার হলো, শসার খোসায়ও এই স্টেরল থাকে। শসাতে আরো রয়েছে ফসফরাস, এই উপাদানটিকে হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী মূল পুষ্টি উপাদান হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। শসাতে প্রায় চার শতাংশ ফসফরাস থাকে, যেটা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।

সামারি

আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি, শসা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। শশার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজ। এই উপাদান গুলো শরীরের পুষ্টির ঘাটতে দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, বিভিন্ন দীর্ঘ মেয়াদী রোগের ঝুঁকি কমায়।

আবার অতিরিক্ত শসা খাইলোও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ মাত্রা অতিরিক্ত শসা খাইলে পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিক, বমি বমি ভাব এবং বদহজমের মতো বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাই আজ থেকে আপনিও প্রতিদিন শসা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন, কিন্তু কোনভাবেই মাত্রা অতিরিক্ত নয়। আমাদের অবশ্যই এটা মনে রাখতে হবে, শসার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক, কিন্তু এটার কিছু সাইডইফেক্টও আছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button