ক্যান্সার কি এবং কেন হয় বিস্তারিত জানুন
ক্যান্সার কি
মানুষকে যে রোগগুলো সব থেকে বেশি ভোগায়, তার মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। ক্যান্সার শরীরে একবার বাসা বেঁধে ফেললে রোগীকে বাঁচিয়ে ফেরানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। একবার ক্যান্সার হয়ে গেলে তখন আরও অনেক রোগ চেপে বসে শরীরে। আর এই সময় রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা একেবারে দুঃসাধ্যই হয়ে যায়।
তবে কেউ যদি প্রাথমিক পর্যায়েই এই মরণব্যাধি শনাক্ত করতে পারে, তখন তার বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানিই উজ্জ্বল থাকে।
ব্রিটেনে একজন ক্যান্সার চিকিৎসক এবং সাউথেন্ড ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের কনসালটেন্ট ক্লিনিক্যাল অনকোলজিস্ট ডা. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “একেবারে শুরু দিকে শনাক্ত করা গেলে সব ক্যান্সারই সারিয়ে তোলা সম্ভব। যদি অনেক পরে ধরা পড়ে, তখন আর সারানো সম্ভব হয় না।
তাই ক্যান্সার সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। আর ক্যান্সার সম্পর্কে বুঝতে হলে, আগে জানতে হবে ক্যান্সার কি?
ক্যান্সার কি বা কেন হয়
বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীর শরীরই অসংখ্য ছোট ছোট কোষের মাধ্যমে তৈরি। আর এই কোষগুলি সর্বদা বিভাজন থাকে। কারণ, সুস্থ দেহে এই কোষগুলো নিয়মিত বিভাজন পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের বৃদ্ধি সাধন ও ক্ষয় রোধ করে থাকে। একটি সুনিয়ন্ত্রিত নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজটি নিয়ন্ত্রিত হয়। কারণ, কোষ বিভাজন ছাড়া জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব।
কিন্তু অনেক সময় এই কঠোর নিয়ন্ত্রনের বেড়াজাল ছিন্ন করে কোন একটি খারাপ কোষ বিভাজিত হয়ে যায় এবং বিরামহীনভাবে তা চলতেই থাকে। এর ফলে সৃষ্টি হয় অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন। আর এই অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের ফলেই সৃষ্টি হয় ক্যান্সার।
সাধারনভাবে বলতে গেলে যখন এই কোষগুলো কোনও কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একে টিউমার বলে। এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। আর ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই ক্যান্সার বলে।
তবে, ক্যান্সার কোন সংক্রামক ব্যাধি নয়। এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি কেন এই স্বাভাবিক কোষ অস্বাভাবিক কোষে পরিণত হয়। তবে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান, ‘হরমোন’ তেজস্ক্রিয়তা, পেশা, অভ্যাস (ধূমপান, তামাক সেবন, মদপান ইত্যাদি), আঘাত, প্রজনন ও বিকৃত যৌন আচরণ, বায়ু ও পানি দূষণ, খাদ্য (যেমন- অত্যধিক চর্বি বা অধিক চর্বিযুক্ত খাদ্য), বিভিন্ন বর্ণগত, জীবন যাপন পদ্ধতিগত, ভৌগোলিক ও পরিবেশগত প্রভাব, প্যারাসাইট ও ভাইরাস সাধারণত সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ এবং এর প্রায় ৯০ শতাংশই এড়িয়ে চলা সম্ভব।