Healthy and nutritious food

ধনে পাতার খুব কার্যকরী ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

(ধনে বা ধনিয়া পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা)

ধনিয়া পাতা আমাদের সবার কাছেই খুব পরিচিত একটি উদ্ভিদ। ধনিয়া পাতা পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। ধনিয়া পাতার বৈজ্ঞানিক নাম Coriandrum sativum. ধনিয়া উত্তর আফ্রিকার স্থানীয় এক ধরনের উদ্ভিদ। এটি সুগন্ধি, ঔষধি এবং মসলা জাতীয় উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। ধনিয়া বঙ্গ অঞ্চলে প্রায় সর্বত্র খাবারের মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।

তবে খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়ানোর কাজেই ধনিয়া পাতার গুণাগুণ শেষ নয়। ধনিয়া পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। চলুন বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি-

ধনিয়া পাতার পুষ্টি উপাদান

ধনিয়া পাতায় বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন খনিজসহ আর অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যামন্দির হয়েছে। যেমন ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে-

  • ভিটামিন ‘এ’: দৃষ্টিশক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • ভিটামিন ‘সি’: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করে।
  • ভিটামিন ‘কে’: হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
  • থায়ামিন: শরীরে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • রিবোফ্লাভিন: ত্বক, চুল এবং চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

খনিজ উপাদানের মধ্যে রয়েছে ম্যাংগানিজ, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্লোরিন, জিংক, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।

  • ম্যাংগানিজ: হাড়ের গঠন এবং শক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • আয়রন: শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • ম্যাগনেসিয়াম: পেশীর কার্যকারিতা, স্নায়ু স্বাস্থ্য এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ফসফরাস: হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ এবং শরীরে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • ক্লোরিন: শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • জিংক: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ক্ষত নিরাময় এবং শরীরের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্নায়ু ও পেশীর কার্যকারিতায় ভূমিকা রাখে।

এছাড়াও আরো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন:

  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: শরীরে ফ্রি র‌্যাডিকেলের কারণে হওয়া কোষের ক্ষতি রোধ করে। ফ্রি র‌্যাডিকেল ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের সাথে যুক্ত।
  • ফাইবার: কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দীর্ঘস্থায়ী সন্তুষ্টি প্রদান করে।

ধনে বা ধনিয়া পাতার উপকারিতা

ধনে পাতার উপকারিতা

1.চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে

আমরা আগেই জেনেছি, ধনিয়া পাতায় প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “সি” রয়েছে। এই উপাদানটি আমাদের দেহের সংযোগকারী টিস্যু গঠনে এবং সংরক্ষণে সহায়তা করে। পাশাপাশি, এটি চোখের রক্তনালী গুলিকে নমনীয় রাখে। এতে চোখ সুস্থ থাকে।

এছাড়াও, চোখের যত্নে বিভিন্ন ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন “এ” সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়। ভিটামিন “এ” ছাড়াও ভিটামিন “ই” এবং ভিটামিন “সি” দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে এবং চোখকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আবার, ধনিয়া পাতায় উপস্থিত আরেকটি উপকারী পুষ্টি উপাদান হলো বিটা ক্যারোটিন। এটি একটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি পিগমেন্ট। এটা বিভিন্ন উদ্ভিদ এবং শাক সবজি জাতীয় খাবারে বেশি পাওয়া যায়।

2-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে

ব্রিটিশ নিউট্রিশন ফাউন্ডেশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ধনেপাতা একজন মানুষের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের মতো কাজ করে, পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এছাড়াও, ধনে পাতায় আরো বেশ কয়েকটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, যেগুলো একজন মানুষের সেলুলার ক্ষতি প্রতিরোধ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলির মানুষের শরীরের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে।

এছাড়াও, একটি টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় দেখা গেছে, ধনিয়া বীজে যেসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এগুলো প্রদাহ হ্রাস করে পাশাপাশি, ফুসফুস, প্রোস্টেট, স্তন এবং কোলন ক্যান্সারের কোষগুলির বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।

3.হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে

হার্ড একজন মানুষের শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে, শরীরের বিভিন্ন অংশ পুষ্টি, শক্তি, অক্সিজেন, এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড সরবরাহ করে। আর এই হার্টকে ভালো রাখতে ধনিয়া পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

কারণ, ধনে পাতা নিয়মিত খাইলে শরীরে খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা যেমন কমে যায়, তেমনি ভাল কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে হৃদরোগের ঝুকি কমতে শুরু করে।

এছাড়া, ধনিয়া পাতা হৃদরোগের অন্যতম একটি কারণ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য কর। এছাড়াও, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ধনিয়া জাতীয় মশলা খাওয়ায় মানুষের সোডিয়াম গ্রহণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেটা হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

4.মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে এবং মস্তিস্কের নার্ভ সিস্টেমগুলো সচল রাখতে সাহায্য করে ধনে পাতা। এটাতে রয়েছে আলজিমারস নামক এক ধরনের উপাদান। এই উপাদানটি মস্তিষ্কে রোগ নিরাময়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

একটি ইঁদুর পরীক্ষায় দেখা গেছে, ধনিয়া এক্সট্রাক্ট ড্রাগ-প্ররোচিত খিঁচুনির ফলে স্নায়ু-কোষের ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষিত ছিল। এছাড়া, ধনেপাতা স্নায়ুতন্ত্রের কোলিনেরেস্টেস নামক এক ধরনের এনজাই রোধ করে, যেটা স্মৃতিশক্তি উন্নতি করতে সাহায্য করে।

5.হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে

ধনে পাতায় এক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, এই উপাদানটি সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আবার, ধনেপাতা শরীর ঠান্ডা রাখে এবং হজমে সাহায্য করে।

এছাড়া ধনে পাতা পেট ফাঁপা ও পাকস্থলির বিভিন্ন সমস্যা দূর করে হজমশক্তি বাড়ায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ধনিয়াযুক্ত যেসব ভেষজ ঔষধ রয়েছে তার ৩০ ফোঁটা প্রতিদিন তিনবার খাইলে পেটের ব্যথা, ফোলাভাব এবং পাকস্থলী সম্পর্কিত অস্বস্তি হ্রাস পায়।

6.ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে

ডায়াবেটিস একটি হরমোন জনিত রোগ। অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি অলরেডি উৎপন্ন কৃত ইনসুলিন যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো ‘ডায়াবেটিস’ বা ‘বহুমূত্র রোগ’। তখন রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিত জনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়।

দ্য ব্রিটিশ জার্নাল অফ নিউট্রিশন’-এর মতে, ধনিয়া পাতায় ইনসুলিন প্রতিরোধ করার মতো ক্ষমতা রয়েছে, এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, ধনিয়া পাতার সাধারণ কিছু গুণ রয়েছে, যেটা শরীরে ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে, ক্ষুধা বাড়ায় এবং হজমক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আবার, ধনেপাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিয়মিত খাইলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারণ এই গুঁড়ো শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়তে সাহায্য করে।

7.ত্বকের যত্নে বেশ উপকারী

দাগহীন সুস্থ, সুন্দর ও পরিষ্কার ত্বক কে না চায়। আর প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে ত্বকের যত্নে ধনিয়াপাতা খুব সুনাম রয়েছে অনেক আগে থেকেই। কারণ এটা ত্বক ও চুলের ক্ষয়রোধ করে। ধনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ , ভিটামিন সি, ফসফরাস ও ক্লোরিন।

তাই প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে এটা দারুন ভূমিকা পালন করে। আবার, ডিসইনফেকট্যান্ট, ডিটক্সিফাইং বা বিষাক্ততা রোধকারী, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকার কারণে এটা বিভিন্ন স্কিন ডিজঅর্ডার বা ত্বকের অসুস্থতা সারাতে সাহায্য করে।

8.যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে ধনে পাতার উপকারিতা

বর্তমান সময়ে যৌন হীনতা একটি কমন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যার পিছনে খাদ্যাভাস মারাত্মক ভাবে প্রভাব ফেলে। খাদ্যাভাস আপনার লিবিডোতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে যখন একজন মানুষের বয়স বাড়তে থাকে তখন এই ক্ষতিকর প্রভাবের সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়।

তাই যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে খাদ্য অভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে বা খাদ্যের পরিবর্তন আনতে হবে। আর এই যৌন শক্তি বৃদ্ধিকারক খাদ্য গুলোর মধ্যে ধনেপাতা অন্যতম একটি। কারণ, মধুজাতীয় খাবারের সাথে ধনেপাতা মিক্স করে খাইলে মানুষের যৌনশক্তি প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এছাড়া শুকনো ধনেও একই কাজ করে।

9.কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে

কিডনি মানব দেহের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীরের ছাঁকনি হিসাবে কাজ করে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি। বিপাক ক্রিয়ার পর একজন মানুষের শরীরে যে বর্জ্য ও টক্সিক পদার্থ থাকে সেটা রক্ত থেকে ছেঁকে মল-মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেওয়ার কাজ করে এই কিডনি। আর এই কিডনি ভালো রাখতে ধনেপাতা বেশ উপকারী।

প্রতিদিন ধনেপাতার শরবত বা সরাসরি ধনেপাতা খাইলে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কারণ, কিডনির মধ্যে জমে থাকা ক্ষতিকর লবন এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এছাড়া, ধনেপাতার মধ্যে আয়রন নামক একটি উপাদান রয়েছে। এই উপাদানটি রক্তস্বল্পতা রোধেও সাহায্য করে।

10.খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে

প্রত্যেকটা মানুষের দেহে এলডিএল নামক এক ধরনের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে। এটা দেহের শিরা-উপশিরার দেয়ালে জমে হৃৎপিন্ডে স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে সমস্যা বাধা সৃষ্টি করে। এটা হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম একটি কারণ।

ধনেপাতা রক্তের এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। আবার দেহের জন্য ভালো বা উপকারি এক ধরনের কোলেস্টেরল রয়েছে, (এটার নাম ‘এইচডিএল‘) ধনেপাতা এই কোলেস্টরেলের মাত্রা বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

ধনেপাতায় থাকা আয়রন রক্ত তৈরি বা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ধনেপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-কে। এই কারনে ধনেপাতা কোলেস্টেরলমুক্ত। ফলে দেহের চর্বির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে। ধনেপাতা রক্ত পরিষ্কার করতেও অনেক সাহায্য করে।

ধনে পাতার অন্যান্য উপকারিতা

উপরোক্ত উপকারিতা ছাড়াও ধনেপাতার আরো অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। যেমন:

  • ঋতুস্রাবের সময় রক্তসঞ্চানল ভালো হওয়ার জন্যে ধনেপাতা খেলে উপকার পাওয়া যায়। এতে থাকা আয়রন রক্তশূন্যতা দূর করতেও বেশ উপকারী।
  • এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা বাতের ব্যথাসহ হাড় এবং জয়েন্টের ব্যথা উপশমে কাজ করে।
  • এর অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান বিভিন্ন চর্মরোগ কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়া, প্রচুর ক্যালসিয়াম এবং মিনারেলসের সোর্স এই ধনে পাতা, যেটা আমাদের শরীরের হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও, দেহের কাটা-ছেঁড়া অংশগুলো দ্রুত শুকানোর জন্য খুবই উপকারি এই ধনিয়া পাতা। দেহের চুলকানি-পাঁচড়ায় ধনেপাতার রস লাগালে তাড়াতাড়ি ভলো হয়।
ধনিয়া পাতার উপকারিতা

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি ধনিয়া পাতা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী, কিন্তু এটার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই ধনিয়া পাতা খাওয়ার সময় অবশ্যই আমাদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন:

  • অতিরিক্ত ধনেপাতা লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
  • স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিভিন্ন সমস্যা দূর করত সাহায্য করে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খাইলে হজমক্রিয়ায় বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
  • আমরা জেনেছি, ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়, কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু অতিরিক্ত ধনেপাতা খাইলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
  • গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাইলে ভ্রূণের বা বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
  • এছাড়াও, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধনেপাতা শরীরে এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় ধনেপাতা খাইলে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।

অবশ্য আমরা প্রতিদিন যে পরিমাণে ধনে পাতা খাই এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে মনে রাখতে হবে, অতিমাত্রায় রস সেবন করলেই ক্ষতির কারণ হয়ে দড়ায়।

ধনে পাতার উপকারিতা

উপসংহার

আমরা অধিকাংশ মানুষই ধনে পাতার সঠিক উপকারিতা না জেনেও বিভিন্নভাবে এটা খেয়ে থাকি, যেমন:- তরকারির মসলা হিসাবে, ভর্তা করে, ভাজি করে বা বিভিন্ন সালাতের স্বাদ বাড়াতে ইত্যাদি। তাই, আজ আমরা ধনিয়া পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

ধনেপাতার উপকারিতা অনেক তাই এটা যদি আপনার প্রিয় খাবার হয়ে থাকে তাহলে এটা অবশ্যই ভালো। আর আপনার যদি ধনে পাতা খাওয়ার অভ্যাস না থাকে, তাহলে সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে আপনি অবশ্যই এই অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। পাশাপাশি ধনেপাতা খাওয়ার সময় অবশ্যই উপরোক্ত সাবধানতা গুলো অবলম্বন করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button