চায়ের সবচেয়ে ক্ষতিকর ১০টি দিক বা প্রভাব
চায়ের ক্ষতিকর দিক
বিশ্বে যত জনপ্রিয় পানীয় আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো চা। বৃষ্টির দিনে এক কাপ চা খুব সহজেই মন ভালো করে দিতে পারে। সেই সঙ্গে মেজাজও হয় ফুরফুরে। এছাড়া, অফিসে, বন্ধুদের সাথে আড্ডায়,পরিবারের সবাই একসাথে বসে, বই পড়ার ফাঁকে, অবসরে এক কাপ চা নতুন করে যেন প্রাণ ফিরিয়ে দেয়। একইসাথে চায়ের উপকারিতাও অনেক। ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও চায়ের গুরুত্ব রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো: এত উপকারিতা থাকা সত্বেও চা কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকারক?
উত্তরটা খুব সহজ। আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকটা জিনিসেরই কিছু ভালো এবং কিছু খারাপ বৈশিষ্ট্য থাকে। ঠিক তেমনই চায়েরও কিছু ভালো কিছু খারাপ দিক আছে। তাই, চা ঠিক যতটুকু আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজন আপনি ততটুকুই গ্রহণ করুন। এর বেশি হলে অবশ্যই এটা আপনার শরীরকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তাহলে এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে: একজন মানুষের ঠিক কতটুকু চা গ্রহণ করলে শারীরিক কোনো ক্ষতি হবে না।
চলুন তাহলে এই প্রশ্নটার উত্তর একটু বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করি। কারণ প্রত্যেক চা প্রেমীরাই এই প্রশ্নটার উত্তরটা নিয়ে একটু বিভ্রান্তিতে থাকে।
একজন সুস্থ মানুষের একদিনে কতটুকু পরিমান চা খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত
আমরা জানি চায়ের মধ্যে বিভিন্ন রকম উপাদান থাকে। যেমন: পলিফেনল, থায়াফ্লাবিন, থায়ারুবিজিন, ট্যানিন ইত্যাদি। এগুলো ছাড়াও আরো একটি উপাদান থাকে তার নাম হলো ক্যাফেইন। আর এই ক্যাফেইনও মানুষের শরীরের জন্য উপকারী, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ।
এই নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি খাইলে তখন শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মানুষ দিনে সর্বোচ্চ ৪০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন খেতে পারেন।
এবার আসুন ছোট একটা ক্যালকুলেশন করি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কাপ পরিমাণ চায়ে প্রায় ৩০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। পাশাপাশি, এক কাপ ইনস্ট্যান্ট কফিতে ৬০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম এবং এসপ্রেসো কফিতে ৪০ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। এই ক্যাফেইনের পরিমাণটা আপনার চা পাতার ধরন এবং প্রস্তুত করার নিয়মের উপর কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
এছাড়াও, বিভিন্ন প্রকার চকলেট ও রঙিন কোমল পানীয়তেও ক্যাফেইন থাকে।
এখন আপনি যদি প্রতিদিন 4 কাপ করে চা পান করেন, তাহলে 90×4= 360 মিলিগ্রাম ক্যাফেইন আপনার শরীরে প্রবেশ করছে। (এখানে গড়ে প্রতি কাপে 90 মিলিগ্রাম করে ক্যাফেইন ধরা হয়েছে। কারণ আগেই বলা হয়েছে, চা পাতা ধরণ এবং প্রস্তুত করার নিয়মের উপর কিছুটা কম বেশি হতে পারে)
যেহেতু, বিশেষজ্ঞদের মতে একজন মানুষ সর্বোচ্চ 400 মিলিগ্রাম ক্যাফেইন খাইতে পারে, (এখানে 400 মিলিগ্রাম সর্বোচ্চ বলা হয়েছে) সেহেতু, 360 মিলিগ্রাম স্বাভাবিক। মানে, আপনি একদিনে 360 মিলিগ্রাম ক্যাফেইন (4 কাপ পরিমাণ চা) খাইলে চায়ের সর্বোচ্চ উপকারিতাটা পাবেন।
এবার যদি আপনি ওই একই দিনে অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত খাবার খান, তাহলে অবশ্যই চা খাওয়ার পরিমাণটা কমিয়ে দিতে হবে। তাই কত কাপ চা খাবেন সেটা হিসাব না করে, কতটুকু ক্যাফেইন খাচ্ছেন সেটা হিসাব করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাহলেই চায়ের সর্বোচ্চ উপকারিতাটা পাবেন।
এখন, আপনি যদি 400 মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন খান, তাহলে আপনার শারীরিক বা মানসিক কি কি সমস্যা হতে পারে। চলুন সেগুলো বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি –
#1-শরীরে আয়রন শোষণ ক্ষমতা হ্রাস পায়
শারীরিক সুস্থতার জন্য আয়রন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আয়রনের অভাবে শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। যেমন: মাথাব্যথা, শারীরিক ক্লান্তি, রক্তস্বল্পতা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, ঘুমের অসুবিধা হওয়া ইত্যাদি আয়রনের ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। আর মাত্রা অতিরিক্ত চা পান করলে শরীরে আয়রন ঘাটতির ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কারণ, চায়ের মধ্যে থাকা ট্যানিন বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে শরীরের আয়রন শুষে নেয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চা আয়রন শোষণের ক্ষমতা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে।
পাশাপাশি, খালি পেটে চা পান করলে শরীরের প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের সক্রিয়তা কমে যায়। ফলে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না।
#2-ওষুধের প্রভাব হ্রাস করতে সাহায্য করে
চায়ের অনেক উপকারী গুণ রয়েছে। তারপরও মাত্রা অতিরিক্ত চা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্রা অতিরিক্ত চা পান করলে কিছু কিছু এন্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমে যায়। যেমন: কেমোথেরাপির ওষুধ, ক্লোজাপাইন, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলসহ ডিপ্রেশন জনিত ওষুধের ক্রিয়া কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি মাত্রা অতিরিক্ত চা অনেক ভিটামিন ও ওষুধের হজম প্রক্রিয়াও বাধা দেয়।
#3-মাথা ব্যাথার প্রবণতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
আমাদের অনেকেরই ধারণা চা মাথা ব্যাথার ঔষধ হিসেবে কাজ করে। ক্ষেত্রবিশেষ এটা একটি ভুল ধারণা। কারণ, যখন আপনি চা পরিমাণমতো খাচ্ছেন তখন এটি মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু মাত্রা অতিরিক্ত চা পান করলে এটি মাথা ব্যাথা বাড়াতে সাহায্য করবে।
আমরা আগেই জেনেছি চায়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ক্যাফেইন আছে। আর যখন কেউ 400 মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করে তখন এটি ঘটে। আবার যদি কারোর চা পান করাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায় তাহলেও বেশিক্ষণ চা না খেয়ে থাকলে মাথা ব্যথা করতে পারে। তাই চা অবশ্যই পরিমাণমতো খাওয়ার অভ্যাস করুন।
#4-গর্ভাবস্থায় জটিলতা বৃদ্ধি করতে পারে
গর্ভবর্তী মায়েদের সব সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। হোক সেটা চলাফেরায় অথবা খাবারে। তাই আপনার যদি ঘন ঘন চা খাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় এটা কমিয়ে দিন। কারণ, অতিরিক্ত চা পান করা গর্ভবতী মা ও তার শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় দিনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন খাওয়া ঠিক নয়।
এই সময় অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে ভ্রুণের ক্ষতি হতে পারে। ফলে বাড়তে পারে অবাঞ্ছিত গর্ভপাতের ঝুঁকি। তাই গর্ভ অবস্থায় চা, কফি, রঙ্গিন কোমল পানি, চকলেট ইত্যাদি অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।
#5- এসিডিটির সমস্যা বেড়ে যায়
বর্তমান বিশ্বে এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা একটি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। সাধারনত খাবারের কিছু খারাপ অভ্যাসের কারণে এই সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে। যেমন: নিয়ম মেনে খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত ঝাল মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, ধূমপান করা, মদ্যপান করা, অতিরক্ত ফাস্টফুড খাওয়া ইত্যাদি। এছাড়া, মাত্রা অতিরিক্ত চা পান করলেও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা বেড়ে যায়।
কারণ, চায়ে বিদ্যমান ক্যাফেইন শরীরে এক ধরনের অ্যাসিড তৈরি করে। এর থেকে পেট ফুলে যাওয়া, বুক জ্বালাপোড়াসহ অস্বস্তির মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। অন্যদিকে খাদ্যনালির দিকে পাকস্থলীর অ্যাসিড ঠেলে দেয়ার পেছনেও অন্যতম কারণ অতিরিক্ত চা পান। তাই আপনি যদি আগে থেকেই গ্যাসের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে চা খাওয়া কমান।
#6-কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়
মানব জীবনের অন্যতম একটি বিপর্যয়ের নাম হলো হার্ট অ্যাটাক। আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই হার্ট অ্যাটাকে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বলা হয়। এটা এমনই একটা রোগ যা হার্ট বা রক্তনালীর ওপর সংক্রমণ করে। এই কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণে প্রতিদিন গোটা বিশ্বে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাফেইন একজন মানুষের কার্ডিও ভাসকুলার সিস্টেমের ক্ষতি করে। ফলে বেড়ে যায় কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি। তাই হার্টের সমস্যা থাকলে যতটা সম্ভব কম চা খাওয়াই ভাল। এছাড়াও যাদের পারিবারিকভাবে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের চায়ের এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত।
#7-কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে
চায়ের অন্যতম একটি ক্ষতিকর দিক হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। কোষ্ঠকাঠিন্য মানব জীবনে একটি বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। মলত্যাগ যদি সপ্তাহে তিনবারের কম অথবা পরিমাণে খুব কম হয়, অথবা মল অস্বাভাবিকের থেকে শক্ত বা শুকনো হয়, অথবা অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করেও মলত্যাগ না হয়, তাহলে তখন তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়।
তবে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করে। একই সাথে মাত্রা অতিরিক্ত চা খাইলেও এই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
কারণ, চায়ের মধ্যে থাকা থিওফাইলিন নামের রাসায়নিক পরিপাকের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়।
এছাড়াও, আমরা আগেই জেনেছি চায়ে মধ্যে অধিক পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে, যেটা হজমের সমস্যা তৈরি করে। আর খাবার ঠিকমতো হজম না হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি অন্যতম কারণ। পাশাপাশি, চায়ে ট্যানিন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে, যা খাবার থেকে লৌহ শোষণে বাধা সৃষ্টি করে। এটাও কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি অন্যতম কারণ।
#8-শারীরিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেতে পারে
একই জায়গায় থেকে একটি কাজ স্থিরভাবে ক্রমাগত করতে না পারার অক্ষমতাকে অস্থিরতা বলে।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অস্থিরতাকে বাড়তে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ, স্বাভাবিক অস্থিরতাই এক সময় বড় ধরনের শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
আর অতিরুক্ত চা পান শারীরিক স্থিরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ, চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাফেইন মাত্রা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে শারীরিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এছাড়া, মাত্রা অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে হঠাৎ করেই শরীরের রক্তচাপ বেড়ে যায়। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই শরীরের কাঁপুনি সহ মানসিক এবং শারীরিক অস্থিরতা ও হৃদস্পন্দনের গতি বাড়তে থাকে।
#9-মূত্রথলির ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্রা অতিরিক্ত চা পান করলে পুরুষদের মূত্রথলির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
এছাড়াও অন্য আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে সমস্ত ব্যক্তিরা দিনে 6 থেকে 7 কাপ চা পান করেন, এদের তুলনায় যারা মোটেই চা পান করেন না বা এদের থেকে কোম পান করেন তাদের মূত্রথলির ক্যান্সারের ঝুঁকি 50% কোম। তাই, অতিরিক্ত চা পান করা থেকে বিরত থাকুন এবং চায়ের সর্বোচ্চ উপকারিতাটা পেতে পরিমিত মাত্রায় চা পান করুন।
#10-ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে
আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মমাফিক ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজন। আর একজন মানুষের ঘুম আসে মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণের কারণে। কারণ, এই হরমোন মস্তিষ্ককে বার বার সিগন্যাল দিতে থাকে ঘুমের জন্য। কিন্তু বেশি পরিমাণ চা খাইলে মেলাটোনিন রহমানের নিঃসরণ কমে যায়।
পাশাপাশি, ক্যাফেইন মস্তিষ্ককে উত্তেজিত রাখতেও সাহায্য করে। যেটা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। আবার, ক্যাফেইন দেহের রক্ত-সঞ্চালনকে বাড়িয়ে দেয়, ফলে ঘুম ঘুম ভাব আসলেও পুরোপুরি ঘুম হয়না।
গবেষণায় দেখা গেছে, চা পানের অভ্যাস আছে এমন বেশির ভাগ মানুষের অনিদ্রা রোগের অন্যতম কারণ হলো চা। এই জন্য ঘুম দূর করতেও অনেকে চা পান করে থাকে।
চায়ের অন্যান্য ক্ষতিকর দিক
চায়ের উপরুক্ত ক্ষতিকর দিক ছাড়াও মাত্রা অতিরিক্ত চায়ের আরো অনেক অন্যান্য ক্ষতিকর দিক বা প্রভাব রয়েছে। যেমন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একজন মানুষের শরীরে ফ্লুোরাইডের স্বাভাবিক মাত্রা ছয় মিলিগ্রাম পর্যন্ত হওয়া দরকার। এর থেকে বেশী মাত্রায় ফ্লুরাইড শরীরে প্রবেশ করলে স্কেলিটাল ফ্লুওরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
আর বাজারের সস্তা দামের চায়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফ্লোরাইড থাকে। তাই, অতিরিক্ত চা পান করলে আমাদের হাড়ের মারাত্মক অসুখ স্কেলিটাল ফ্লুওরোসিস পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া মাত্রা অতিরিক্ত চা খাইলে ডিটক্সিফিকেশন হয়। যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের যতটা সম্ভব চা কম খাওয়াই ভালো। এছাড়াও, মাত্রা অতিরিক্ত ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্রের উপরও খারাপ প্রভাব ফেলে।
সামারি
আপনাকে একটা কথা আবারও মনে করিয়ে দিই। চা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। (চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন) তাই আপনি অবশ্যই চা খাবেন কিন্তু পরিমিত মাত্রায়। যখন আপনি মাত্রা অতিরিক্ত চা খাবেন তখনই শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হবে।
আবার, আপনার যদি অতিরিক্ত চা খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে একবারে বন্ধ না করে আস্তে আস্তে কমিয়ে দিন। কারণ একবারেই বন্ধ করে দিলে মাথা ব্যাথা, অবসন্নতা, শারীরিক দুর্বলতা সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, পরিমিত মাত্রায় চা পানের চেষ্টা করুন। তাহলেই চায়ের সর্বোচ্চ উপকারিতাটা পাবেন। ধন্যবাদ।