কিসমিসের খুব গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

(কিসমিসের উপকারিতা)

কিসমিসের সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। কিসমিস হল আঙুর ফলের শুকনা রূপ। আর এই কিসমিস স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাই কিসমিসকে শুকনো ফলের রাজাও বলা হয়।

কিসমিস বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে উত্পাদিত হয় এবং এটি সরাসরি খাওয়া যায়। পাশাপাশি, বিভিন্ন খাদ্য রান্নার সময় উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি প্রাচীনকাল থেকে শক্তি বা ক্যালরির চমৎকার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

তাই, নিচে কিসমিসের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে

কিসমিসের পুষ্টিগুণ

কিসমিসের উপকারিতা

প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) কিসমিসের পুষ্টিমান নিম্নরুপ :

  • শর্করা ৭৯.১৮ গ্রাম
  • চিনি ৫৯.১৯ গ্রাম
  • খাদ্য ফাইবার ৩.৭ গ্রাম
  • স্নেহ পদার্থ ০.৪৬ গ্রাম
  • প্রোটিন ৩.০৭ গ্রাম

প্রধান ভিটামিন গুলোর মধ্যে রয়েছে-

  • ভিটামিন বি৬ ০.১৭৪ মিঃগ্রাম
  • রিবোফ্লাভিন বি২ ০.১২৫ মিঃগ্রাম
  • কোলিন ১১.১ মিঃগ্রাম
  • ভিটামিন সি ২.৩ মিঃগ্রাম
  • ভিটামিন ই ০.১২ মিঃগ্রাম
  • ভিটামিন কে ৩.৫ মাইক্রোগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম ৫০ মিঃগ্রাম
  • লোহা ১.৮৮ মিঃগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম ৩২ মিঃগ্রাম
  • ম্যাঙ্গানিজ ০.২৯৯ মিঃগ্রাম
  • ফসফরাস ১০১ মিঃগ্রাম
  • পটাসিয়াম ৭৪৯ মিঃগ্রাম
  • সোডিয়াম ১১ মিঃগ্রাম
  • দস্তা ০.২২ মিঃগ্রাম

এবং অণ্যান্য উপাদানসমূহের মধ্যে ফ্লোরাইড ২৩৩.৯ মাইক্রোগ্রাম বিদ্যমান রয়েছে। এবার চলুন কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি-

1.দেহে শক্তি সরবরাহ করতে সাহায্য করে

আমাদের মধ্যে অনেকেই মাঝে মধ্যে বলে থাকেন- ভালো লাগছে না, কাজে মন বসছে না, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করছে, অলস লাগছে, ক্লান্তি বোধ হচ্ছে, বেশি বেশি ঘুম পাচ্ছে, ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হচ্ছে, কাজে গতি আসছে না ইত্যাদি। এগুলো শরীর দুর্বলতার একটি বড় লক্ষণ। বড় কোন রোগের উপসর্গও হতে পারে এই দুর্বলতা।

আর এই দুর্বলতা দূরীকরণে কিসমিস খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, দেহে শক্তি সরবরাহ করতে কিসমিসের অবদান অনেক বেশি। কিসমিসে রয়েছে চিনি, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ, যা তাৎক্ষণিকভাবে দেহে এনার্জি সরবরাহ করে থাকে। তাই দুর্বলতার ক্ষেত্রে কিসমিস খুবই উপকারী।

2.হাড়ের সুরক্ষায় খুব উপকারী

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা হাড় মজবুত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কিসমিসে আরো রয়েছে বোরন নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস হাড়ের ক্ষয় এবং বাতের ব্যথা থেকে দূরে রাখবে।

বর্তমানে সময়ে অনেক মানুষ অস্টিওপরোসিস (হাড়ের একধরনের রোগ) রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বোরন নামক খনিজ পদার্থের অভাবে এই রোগ হয়। আর কিশমিশ বোরনের অন্যতম একটি উৎস।, যা অস্টিওপরোসিস রোগের প্রতিরোধক।

এছাড়া, কিসমিসে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম— যা হাড় গঠনের পাশাপাশি শরীরে টেসটোসটেরন এবং ইস্ট্রোজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং পরিবারের সবাইকে কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করানো উচিত।

3.দাঁত এবং মাড়ির সুরক্ষায় ভালো কাজ করে

বাচ্চারা প্রতিনিয়ত ক্যান্ডি ও অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি করে ফেলছে। কিন্তু এগুলির পরিবর্তে বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করাইলে দাঁতের সুরক্ষা পাবে। আবার একই স্বাদ পাওয়ার সাথে সাথে বিপুল পরিমাণ উপকারও পাবে। চিনি থাকার পাশাপাশি কিসমিসে রয়েছে অলিনিলিক অ্যাসিড, যা মুখের ভেতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে বাঁধা দেয়।

পাশাপাশি, “স্ট্রেপ্টোকক্কাস মিউটান্স” ও “পরফিরোমনাস জিঙ্গিভালিস”, দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী এই দু’টি ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধি ঠেকাতে এই অ্যাসিডের জুড়ি নেই। তাছাড়াও, কিসমিসে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকার জন্য এটি দাঁত শক্ত করে এবং এনামেল গড়তেও সাহায্য করে। যা সুস্থ দাঁতের জন্য খুব দরকারী।

4.ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

কিসমিসে ক্যাটেচিন নামক একধরনের অ্যান্টিওক্সিডান্ট থাকে যা শরীরে ভেসে বেড়ানো ফ্রি র‍্যাডিকলস গুলিকে লড়াই করে নিঃশেষ করে দেয়। এটা জানা গেছে যে শরীরের এই ফ্রি র‍্যাডিকলস গুলিই ক্যান্সার সেলের স্বতঃস্ফুর্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

কিসমিস প্রতিদিনের খাবারে রাখলে শরীরে ক্যাটেচিন এর মতন শক্তিশালী অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আর এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

পাশাপাশি, খাবারে প্রচুর পরিমাণ আঁশ থাকলে কোলোরেক্টারাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। এক্ষেত্রে, এক টেবিল চামচ কিসমিসে ১ গ্রাম পরিমাণ আঁশ থাকে। সুতরাং কিসমিসের আঁশ ক্যান্সারের ঝুঁকি একেবারে কমিয়ে দেয়। আবার, কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরী উপাদান। যা কাঁটা-ছেড়া বা ক্ষত হতে ইনফেকশন হওয়ার হাত থেকে দূরে রাখে।

5.রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে

রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে নেমে গেলে তাকে বলা হয় এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা। হিমোগ্লোবিন হলো রক্তের একটি বিশেষ রঞ্জক পদার্থ। এর প্রধান কাজ শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করা। আর, রক্তশূন্যতার কারণে অবসাদ, শারীরিক দুর্বলতা সহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যেতে পারে। এমনকি, বিষণ্ণতাও দেখা দিতে পারে।

আর কিশমিশে আছে, প্রচুর পরিমাণে লৌহ উপাদান, যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। এককাপ পরিমাণ কিশমিশে ৬মি.গ্রা. লৌহের যোগান দেয়। যা প্রতিদিনের লৌহের চাহিদার ১৭ শতাংশ পূরণ করত পারে।

এছাড়াও, ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অন্তর্গত বেশ কিছু ভিটামিন এতে পাওয়া যায়, যা নতুন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। কিসমিসে কপারও থাকে যা রেড ব্লাড সেল তৈরিতে সাহায্য করে।

6.কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

পায়খানা শক্ত বোঝাতে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য শব্দটি ব্যবহার করি। মেডিকেল সাইন্সের পরিভাষায় পায়খানা সপ্তাহে তিনবারের কম অথবা পরিমাণে কম, শক্ত এবং শুকনা হওয়াকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। আর এই কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে কিসমিস দারুন ভাবে সাহায্য করে।

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। আবার, নিয়মিত কিসমিস খেলে হজমশক্তি ভাল থাকে। এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল পথ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

এছাড়াও, রক্তে অধিক মাত্রায় এসিডিটি (অম্লতা) বা টক্সিসিটি (বিষ উপাদান) থাকলে, তাকে বলা হয়, এসিডোসিস। এই এসিডোসিসের (রক্তে অম্লাধিক্য) কারণে বাত, চর্মরোগ, হৃদরোগ ও ক্যান্সার হতে পারে। কিশমিশ রক্তের এই এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। তাই, নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

7.দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে

নিয়মিত কিশমিশ খেলে বৃদ্ধ বয়সে দৃষ্টিহীন হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। পাশাপাশি কিশমিশে থাকা পলিফেনল উপাদান ক্ষতিকারক ফ্রি-রেডিকেলস ধ্বংস করে চোখকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

এতে আছে প্রচুর পরিমাণ এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। তাছাড়া কিসমিস খেলে সহজে শরীরে বয়সের ছাপ পড়ে না। দৃষ্টি শক্তি হ্রাস ও চোখে ছানি পড়া থেকে দূরে রাখে কিসমিস। তাই চোখ ভালো রাখতে বা চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে বিশেষজ্ঞরা সবসময় কিসমিস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

8.প্রচুর এন্টি কোলেস্ট্রোরেল উপাদান আছে

কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে যেমন: ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল এবং টোটাল কোলেস্টরল। এর মধ্যে একটা হলো উপকারী। আর তিনটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

কিশমিশে কোন ক্ষতিকর কোলেস্ট্রোরেল নাই–এটাই বড় কথা না। বরং কিশমিশে আছে এন্টি-কোলোস্ট্রোরেল উপাদান যা রক্তের খারাপ কোলোস্ট্রোরেলকে হ্রাস করতে সাহায্য করে। আবার, কিশমিশের দ্রবণীয় আশ, লিভার থেকে ক্ষতিকর কোলোস্ট্রোরেল দূর করতে সাহায্য করে।

এক কাপ পরিমাণ কিশমিশে আছে ৪ গ্রাম পরিমাণ দ্রবণীয় আঁশ। তাছাড়া কিশমিশে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পলিফেনল কোলেস্টেরলকে শরীর থেকে এনজাইম শোষণ করা থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। তাই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমানোর জন্য নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

9.রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন বিশ্বের প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ। আর এই সমস্যায় সারা বিশ্বে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর মারা যায়। আর কিসমিস উচ্চ রক্তচাপ কমাতে খুব দারুণ ভাবে সাহায্য করে।

কিশমিশের প্রধান উপাদান, পটাশিয়াম। যেটা রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে। শরীরে থাকা উচ্চমাত্রার সোডিয়াম, রক্তচাপ বাড়ার প্রধান কারণ। কিশমিশ শরীরের সোডিয়ামের মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, কিশমিশ রক্তের মধ্যে থাকা বিষো উপাদান কমাতেও সাহায্য করে।

10.মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারি

মানব স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অঙ্গ হলো মস্তিষ্ক। এটি আমাদের দেহের বেশিরভাগ ক্রিয়াকালাপ পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও শরীরের বাইরে এবং ভিতরে উভয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলি প্রক্রিয়া করে চিন্তাভাবনা, দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী সহ আমাদের আবেগ এবং জ্ঞানীয় ক্ষমতাগুলির পরিচালনা করে থাকে।

আর, কিশমিশে থাকা বোরন মস্তিষ্কের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া বোরন মনোযোগ বৃদ্ধি, চোখের সঙ্গে হাতের সামঞ্জস্য বাড়ানো, স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে। একশ গ্রাম কিশমিশে ২.২ মি.গ্রা. বোরন পাওয়া যায়। এটি বাচ্চাদের পড়াশোনাতেও মনোযোগী করে তুলতে পারে।

11-সুস্থভাবে ওজন বাড়ায়

সবাই ওজন কমাতে চায় না। এমন অনেক মানুষ আছে যারা ওজন বাড়াতেও চায়। আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান সেক্ষেত্রে কিসমিস হতে পারে আপনার পরম বন্ধু হতে পারে। সব ড্রায়েড ফ্রুট যেমন খেজুর কাজুবাদাম ইত্যাদির মতই, কিসমিস সুস্থ উপায়ে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ এতে আছে প্রচুর ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোয ও পোটেনশিয়াল এনার্জি। বডি বিল্ডার বা অ্যাথলিটদের ক্ষেত্রে কিসমিস খেতে বলা হয়। কারণ তাদের প্রচুর এনার্জির প্রয়োজন হয়। তাছাড়া কিসমিস ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে সুস্থ ভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

12.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

আমাদের শরীরে হিউম্যান সিস্টেম গঠন করতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান কিসমিসে বিদ্যমান। এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ শরীরের সিস্টেমে ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলোর সাথে লড়াই করে। ফলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

এছাড়াও, কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরি উপাদান। যা কাঁটা-ছেড়া বা ক্ষত হতে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি অধিকাংশে কমিয়ে দেয়। আবার এটাঅ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল এবং অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য ব্যাক্টেরিয়া এবং ভাইরাল ইনফেকশানের জন্য হওয়া জ্বর কমাতে সাহায্য করে।

13.ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে

ঘুম ভালো না হলে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতাও দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে যাদুকরী ভূমিকা পালন করে কিসমিস। কিসমিসে যে আয়রন রয়েছে তা ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। আমরা সবাই জানি, আয়রন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে না বরং বিপাক ক্রিয়াও উন্নত করে। কিসমিস মানসিক অবসাদ দূর করতে কি ধরণের ভূমিকা পালন করে সে সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হয়নি তবে কিসমিস ভালো ঘুমের ব্যবস্থা করে এবং শরীর ও মন মেজাজ দুটোকেই শান্ত রাখে।

14.ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে

খাবারের পর শরীরে যে ইনসুলিন বৃদ্ধি বা ঘাটতি দেখা দেয়, কিসমিস তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে, পোস্টপ্রান্ডিয়াল ইনসুলিন রেসপন্সকে কিসমিস নামিয়ে দেয়। সে কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিসমিস খাওয়া উপকারি। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মতো কিসমিসের মাত্রা নির্ধারণ করে নিতে হবে।

কারণ, আঙুর শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয় বলে এতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। এজন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। আবার আঙুর খাওয়ার ক্ষেত্রেও ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

15.সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা

কিসমিস আপনার যৌনজীবনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিশমিশে আর্গিনাইন নামের একটি অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা কামশক্তি বাড়ায় এবং উত্তেজনাকে প্ররোচিত করে। এটি পুরুষদের পক্ষে ভাল এবং এটি ইরেক্টাইল ডিসফংশন এর চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। যাদের যৌন সহনশীলতা কম, তাদেরকে ডাক্তাররা নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিসমিসকে লিবেযো বর্ধনকারী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি স্পার্ম চলাচলে সাহায্য করে, ফলে গর্ভধারণ সহজ হয়।

এছাড়াও, কিসমিসের শক্তি আপনার বিবাহিত জীবনকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। এটি একটি ভারতের চিরচেনা ঐতিহ্য। যেখানে নতুন বর ও কনে কিশমিশ এবং জাফরান দিয়ে এক গ্লাস দুধ খাইতে দেওয়া হতো।

কিসমিসের উপকারিতা

সামারি

এছাড়াও নিয়মিত কিসমিস চিবিয়ে খেলে বা কিসমিস ভেজানো পানি খেলে লিভারও ভাল থাকে। এটা খাবার রুচি বৃদ্ধি করে। যারা পেটের রোগে ভুগছেন তাদের জন্য কিসমিস বিশেষ উপকারী। তাই নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

কিসমিসের এত উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও, আপনার বাচ্চাকে কিসমিস অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়াবেন না। কারণ, এটির কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও আছে।

Leave a Comment