কফি খাওয়ার খুব গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

কফি খাওয়ার উপকারিতা

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী খুব জনপ্রিয় একটি পানীয়র নাম হলো ‘কফি’। বৃষ্টির দিনে এক কাপ কফি খুব সহজেই মন ভালো করে দিতে পারে। সেই সঙ্গে মেজাজও হয় ফুরফুরে। অফিসে, বন্ধুদের সাথে আড্ডায়, পরিবারের সবাই একসাথে বসে, বই পড়ার ফাঁকে, অবসরে এক কাপ কফি নতুন করে যেন প্রাণ ফিরিয়ে দেয়। এছাড়া, কফির একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো: কফি একজন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপকারী? কফির সম্পূর্ণ উপকারিতাটা পেতে একজন মানুষের দৈনিক কতটুকু কফি গ্রহণ করা উচিত? এবং অতিরিক্ত কফি পানের ক্ষতিকর প্রভাব কি?

চলুন তাহলে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে step by step জানার চেষ্টা করি –

কফির সম্পূর্ণ উপকারিতাটা পেতে একজন মানুষের দৈনিক কতটুকু গ্রহণ করা উচিত

কফি খাওয়ার উপকারিতা

বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কাপ ইনস্ট্যান্ট কফিতে ৬০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম এবং এসপ্রেসো কফিতে ৪০ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। পাশাপাশি, এক কাপ পরিমাণ চায়ে প্রায় ৩০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। এই ক্যাফেইনের পরিমাণটা আপনার কফির মান এবং প্রস্তুত করার নিয়মের উপর কিছুটা কম বেশি হতে পারে।

এছাড়াও, বিভিন্ন প্রকার চকলেট, রঙিন কোমল পানীয় এবং অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীতেও ক্যাফেইন থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন ব্যক্তি ক্যাফেইনের সম্পূর্ণ উপকারিতাটা পেতে একদিনে সর্বোচ্চ 400 মিলিগ্রাম ক্যাফেইন খাইতে পারে। (অবশ্যই সন্তানসম্ভাবা নারী ছাড়া)

এখন আপনি যদি প্রতিদিন 4 কাপ করে কফি পান করেন, তাহলে 90×4= 360 মিলিগ্রাম ক্যাফেইন আপনার শরীরে প্রবেশ করছে। (এখানে গড়ে প্রতি কাপে 90 মিলিগ্রাম করে ক্যাফেইন ধরা হয়েছে। কারণ আগেই বলা হয়েছে, কফির মান এবং প্রস্তুত করার নিয়মের উপর কিছুটা কম বেশি হতে পারে)

যেহেতু, বিশেষজ্ঞদের মতে একজন মানুষ সর্বোচ্চ 400 মিলিগ্রাম ক্যাফেইন খাইতে পারে, (এখানে 400 মিলিগ্রাম সর্বোচ্চ বলা হয়েছে) সেহেতু, 360 মিলিগ্রাম স্বাভাবিক। মানে, আপনি একদিনে 360 মিলিগ্রাম ক্যাফেইন (4 কাপ পরিমাণ কফি) খাইলে কফির সর্বোচ্চ উপকারিতাটা পাবেন।

এবার যদি আপনি ওই একই দিনে অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত খাবার খান, তাহলে অবশ্যই কফি খাওয়ার পরিমাণটা কমিয়ে দিতে হবে। তাই কত কাপ কফি খাবেন সেটা হিসাব না করে, কতটুকু ক্যাফেইন খাচ্ছেন সেটা হিসাব করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাহলেই কফি খাওয়ার সর্বোচ্চ উপকারিতা টা পাবেন।

এখন চলুন জানা যাক এই নির্দিষ্ট পরিমাণ কফি একজন মানুষের শরীরের জন্য কতটুকু উপকারী, বা কফি খাওয়ার উপকারিতা কি

আয়ু বৃদ্ধি করতে কফির উপকারিতা

#1.আয়ু বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একজন মানুষের স্বাভাবিক আয়ু ১৫০ বছর হওয়া উচিত। একজন মানুষের জন্মের পর থেকে প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে এবং এর প্রায় ছয়গুণ সময়কাল তার স্বাভাবিক আয়ু বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে মানুষের আয়ুষ্কাল দিন দিন কমে যাচ্ছে।

আর এই আয়ু বৃদ্ধি করতে কফির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, ইউরোপীয় ১০ টি দেশের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের ওপর একটি গবেষণা চালিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। 

এছাড়া, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যার ডেভিড স্পিগেলহালটার বলছেন, প্রতিদিন দুই কাপের পর অতিরিক্ত এক কাপ কফি পান করলে একজন পুরুষের আয়ু তিনমাস ও একজন নারীর আয়ু একমাস পর্যন্ত বাড়তে পারে।

কর্মক্ষমতা বাড়াতে কফি

#2.কর্মক্ষমতা বাড়ায়

নির্দিষ্ট পরিমাণ কফি মানুষের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। কারণ, কফির মধ্যে বিদ্যমান ক্যাফেইন শরীরের অ্যাড্রিনালিনর মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে ফ্যাটি অ্যাসিড নিঃসরণের মাধ্যমে কায়িক পরিশ্রমের ক্ষমতা বেড়ে যায়।

এছাড়া, কফি পান করলে এই ক্যাফেইন রক্তে মিশে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যেটা আমাদের মেজাজের উন্নতিতেও সাহায্য করে। আবার, কফির ক্যাফেইন মানুষের মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার অ্যাডেনোসাইনকে ব্লক করে দেয়। ফলে নোরপাইনফ্রাইন ও ডোপামিন নিঃসরণ বেড়ে যায়। যেটা নিউরনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই সব কারণে কফি খেলে আপনি তুলনামূলক কম ক্লান্ত অনুভব করবেন এবং কর্মক্ষম থাকতে পারবেন।

এছাড়াও, কফির বেশ কিছু খাদ্যগুণও রয়েছে। কেমন: রাইবোফ্লাবিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম ও নিয়াসিন। যেগুলো আপনাকে দীর্ঘক্ষন কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে কফির উপকারিতা

#3.ওজন কমাতে সাহায্য করে

বর্তমান সময় অতিরিক্ত ওজন মানুষের মধ্যে যেন একটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। আর, শরীরে বাড়তি মেদ থাকলে বিভিন্ন রকম রোগ জীবাণু বাসা বাঁধতে শুরু করে। সমস্যা দেখা দেয় নিত্যদিনের কাজ কর্মে।

আর শরীরের এই বাড়তি মেদ কমাতে কফির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ লরেন ম্যানাকার ইটদিস ডটকমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলেন, “ব্ল্যাক কফি ক্যালরি মুক্ত ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। 

পাশাপাশি, কফিতে বিদ্যমান ক্যাফেইন প্রায় ৩ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত আমাদের মেটাবোলিক রেট বা বিপাকের গতি বাড়ায়। যেটা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত করে এবং চর্বি ভাঙতে উৎসাহ জাগায়। এছাড়া, ব্ল্যাক কফি শরীরের বিপাকীয় হার বাড়ায়। ফলে হুট করে খিদে পাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

স্মৃতি শক্তি বাড়াতে কফি

#4.স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে

এই স্মৃতিভ্রম থেকে মুক্তি পেতে বা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে শারীরিক বিভিন্ন ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি কফি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

কারণ, কফি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং মস্তিস্ককে সব সময় চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। ফলে এটি আলঝেইমার্সের মতো স্মৃতিবিলোপকারী রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া, কফি নতুন কোনো ঘটনাকে স্থায়ীভাবে মনে রাখাতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

পাশাপাশি, কফিতে বিদ্যমান ক্যাফেইন মস্তিষ্কে তৈরি হওয়া বিষাক্ত উপাদান অপসারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে প্রতিদিন পরিমাণ মতো কফি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবেন।

হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে কফি

#5.হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে

হার্ট ভালো রাখতেও কফি খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। আগে মানুষের মধ্যে একটি ধারণা ছিল কফি হার্টের জন্য ক্ষতিকারক।
কিন্তু আধুনিক গবেষণা বলছে, ক্যাফেইন হৃৎপিণ্ডের উপকারই করে বেশি।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেক্টোলজি ইনফরমেশনের (NCBI) একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কফিতে ফাইটোকেমিক্যাল পাওয়া যায়। যেটা গ্লুকোজ মেটাবলিজম কে উন্নত করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস দূর করে। পাশাপাশি, প্লেটলেট ফাংশন এবং ইমিউনোমোডুলেশনকে প্রভাবিত করে হার্টকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। 

বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে কফি

#6.বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে

বিষণ্ণতাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ শুরুতেই এর প্রতি যথাযথ দৃষ্টি না দিলে এটা থেকে গুরুতর সমস্যা তৈরি হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে ৫ থেকে ১৭ শতাংশ মানুষ বিষণ্নতায় ভুগছে। 

আর কফি এই বিষন্নতা দূর করতেও সাহায্য করে। ২০১১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে ব্যক্তি মাঝামাঝি পরিমাণের (4 কাপ পরিমাণ) কফি পান করেন, তাদের মধ্যে বিষন্নতা কম কাজ করে।

বিশেষ করে, কফি পান করেন এমন নারী এবং পুরুষদের মধ্যে হতাশা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা 53 শতাংশ কম থাকে। পাশাপাশি, বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যাফেইন একঘেয়েমি এবং ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করে।

#7.পারকিনসন্স ও আলঝেইমারস রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

পার্কিনসন রোগ হল একটি স্নায়বিক অসুস্থতা। যেটি নিউরোনের (স্নায়ুর কোষ) উপর প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে মস্তিষ্কে বর্ধনশীল ক্ষয়ের সৃষ্টি করে। গবেষকদের মতে, যারা এই রোগের শিকার হন, তাদের মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনে ভিন্নতা দেখা যায়। যে কারণে মস্তিষ্কের কোষে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না।

আর গবেষণায় দেখা গেছে, পারকিনসন্সের প্রাথমিক উপসর্গ দূর করতে বিশেষ কার্যকর ক্যাফেইন। তাই কফি মস্কিষ্ককে এই রোগের আক্রমণ রুখতে সাহায্য করে। অন্যদিকে কফির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আলঝেইমার্সের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে কাজ করে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে কফি

#8.ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে

মানুষকে যে রোগগুলো সবচেয়ে বেশি ভোগায়, তার মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। আর ব্ল্যাক কফির বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কফিতে উপস্থিত ক্যাফেইন গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার, লিভার ক্যানসার, স্তন ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যানসার, ডিম্বাশয় ক্যান্সার, পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

পাশাপাশি, ‌স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও বেশ কার্যকরী। ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট সম্প্রতি তাঁদের একটি গবেষণা পত্রে জানিয়েছেন যে, কফি ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা তৈরিতে বাধা দেয়। ফলে, ত্বক রক্ষা পায় ক্যান্সারের হাত থেকে।

পাকস্থলী পরিষ্কার করতে কফির উপকারিতা

#9.পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে

কফি হলো মূত্রবর্ধক একটি পানীয়। তাই, নিয়মিত কফি পান করলে প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে ক্ষতিকারক উপাদান ও ব্যাক্টেরিয়া বেরিয়ে যায়। ফলে পাকস্থলি পরিষ্কার এবং সুস্থ থাকে। এছাড়া, নিয়মিত এবং পরিমিত মাত্রায় ব্ল্যাক কফি পান করলে হেপাটাইটিস, যকৃতের ক্যান্সার, ফ্যাটি লিভার এবং লিভার সিরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমে।

কফিতে পলিফেনলস, ক্যাফেইন এবং ডিটারপিনয়েডস রয়েছে, যেটা লিভারকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। হজমের সমস্যা সমাধানে বা হজমক্রিয়া উন্নতি করতেও কফির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই পানীয় আপনার বিপাকীয় হার ৩ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে।

ডায়াবেটিস কমাতে কফি

#10.ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে

কফি খাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়, যা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। 2014 সালে 48 হাজার মানুষের উপর একটি গবেষণা করা হয়েছিলো। এই গবেষণায় গবেষকরা দেখেছেন, যারা চার বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিদিন অন্তত এক কাপ কফি পান করেছেন তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তুলনামূলক 11 শতাংশ কম।

অন্য একটি গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই ঝুঁকি কমানোর পরিমাণটা ২৩ থেকে ৬৭ শতাংশ পর্যন্তও হয়ে থাকে।

এছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, যারা প্রতিদিন চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খান তাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম দেখা গেছে।  তবে সাবধানতার কথা চিন্তা করে ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করেই কফি পান করা উচিত।

নোট:- আপনি যদি প্রতিদিন পরিমানমতো ক্যাফেইন গ্রহণ করেন তাহলে উপরোক্ত উপকারিতাগুলো ছাড়াও আরো অনন্য উপকারিতা পাবেন। তবে মনে রাখতে হবে, কফি পান করতে হবে পরিমাণমতো। কখনোই মাত্রা অতিরিক্ত নয়।

এবার আপনি যদি প্রতিদিন মাত্রা অতিরিক্ত বা 400 মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করেন তাহলে আপনার কি কি সমস্যা হতে পারে চলুন দেখা যাক।

কফি খাওয়ার উপকারিতা

অতিরিক্ত কফি খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব

আমরা আগেই জেনেছি কফি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কিন্তু এটাও জেনেছি যে, কফিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যাফেইন থাকে। এই ক্যাফেইন শরীরের জন্য যেমন উপকারী তেমনি অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।

  • বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক চার কাপের বেশি কফি পান করলে গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। আবার, সন্তানসম্ভবা নারীদের দৈনিক ২০০ মি.গ্রাম ক্যাফেইন শরীরে গেলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি জন্মক্রটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই কফি খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
  • কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ক্যাফেইন হৃদপিণ্ডের রক্তসরবরাহকরী ধমনীতে রক্ত চলাচল ধীর করে দেয়। এছাড়া, বুকধড়ফড়ানি, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা উচ্চ রক্তচাপের জন্যেও শরীরের অতিরিক্ত ক্যাফেইন দায়ী।
  • এছাড়াও, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কফি পান করেন না, তাদের থেকে কফি পানকারীদের ৭৯ মিনিট কম ঘুম হয়। তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে কফিকে না বলুন।
  • এছাড়াও, অতিরিক্ত মাত্রায় কফি পান করলে কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যহত হতে পারে।

তাই দিনে তিন থেকে চার কাপ কফিতেই সন্তুষ্ট থাকুন। আর বাড়তি ওজনের চিন্তা থাকলে কফির সঙ্গে দুধ-চিনি যোগ না করে শুধু ব্ল্যাক কফি পানের অভ্যাস করুন। (চায়ের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)

সামারী

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা একথা সহজেই বুঝতে পারি যে, কফি আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ভাবে উপকৃত করে বা কফি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। তবে আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে কফির সম্পূর্ণ উপকারিতাটা পেতে দৈনিক তিন থেকে চার কাপের বেশি কফি খাওয়া যাবে না।

কারণ কফি যেমন শরীরের জন্য উপকারী তেমনি এর ক্ষতিকর প্রভাবও রয়েছে। তাই এটার ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কফি পান করতে হবে এবং অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ধন্যবাদ।

Leave a Comment