আঙ্গুরের খুব গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

(আঙ্গুরের উপকারিতা)

আঙ্গুর সবার পছন্দের একটি ফল, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারন এতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য দরকারি খনিজ ও ভিটামিন সমূহ।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৩০০ শতাব্দীর দিকে সর্বপ্রথম পার্শিয়ানরা ভারতীয় উপ-মহাদেশে আঙ্গুর চাষ শুরু করেন। যেটা পরবর্তীতে ভারতের দক্ষিনাঞ্চলে বিস্তার আকার লাভ করে। আর ভারতের দক্ষিনাঞ্চলের উঞ্চ আবহাওয়ায় আঙ্গুরের চাষ ভালোও হয়।

এছাড়া, ৪,০০০ বছর আগে জর্জিয়ায় ওয়াইন তৈরির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটা থেকে খুব সহজেই প্রমাণিত হয়, আঙ্গুর অনেক পুরানো একটি ফল ও আঙ্গুরের তৈরি খাবার ইতিহাসে অনেক কালের পুরনো।

বর্তমানে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সবুজ ,লাল, সাদা, কালছে খয়েরি এমন নানা রঙের আঙ্গুর জন্মায়। এমনকি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্তমান সময়ে বীচি ছাড়া আঙ্গুর জন্মানো হয়ে থাকে। সারা পৃথিবীর প্রায় ৭৫.৮৬৬ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে আঙ্গুর চাষ হয়ে থাকে।

তবে মোট উত্‍পাদনের ৭১% ওয়াইন বানাতে, ২৭% তাজা ফল হিসেবে এবং শুধু ২% শুকনো ফল হিসাবে ব্যবহার হয়। আঙ্গুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬, খনিজ উপাদান, ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও শারীরিক সুস্থতায় আরও অন্যান্য অনেক উপাদান রয়েছে।

আঙ্গুরের উপকারিতা

চলুন তাহলে আঙ্গুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি-

1-চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে

আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়র অন্যতম ইন্দ্রিয় হল চোখ। অথচ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই চোখের যথাযথ যত্ন নিতে আমরা ভুলে যাই। চোখের নানা খুঁটিনাটি সমস্যাকে আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তেমন গুরুত্ব দিই না। বর্তমানে কাজের পরিবর্তিত ধরন, বাড়তে থাকা দূষণ, পরিবেশগত পরিবর্তন- এ রকম আরও নানা কারণে চোখে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়।

আর, আঙ্গুর লুটেইন ও জিয়াক্সনথিন ক্যারটিনওয়েড এ সমৃদ্ধ। যা চোখের প্রখর দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে সক্ষম। এমনকি আঙ্গুর রেটিনার উপর সুরক্ষা বর্ম তৈরি করে। যেটা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে চোখের ভিশন পাওয়ার বাড়ায় ও অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। এটি চোখের কোষের অকালবার্ধক্য রোধ করতেও সাহায্য করে।

এছাড়াও, যারা বয়সজনিত কারণে চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্যেও এটি খুব উপকারী। আবার, আজকাল ছোট বয়সেই চশমা পরতে হচ্ছে অনেক শিশুরই। কিন্তু এটি খেলে বড় বয়সেও ছানি পড়া বিলম্বিত হয়। চোখের পাওয়ার কমে যাওয়া বা বর্ণান্ধতার সমস্যা সমাধানে খুবই ইমপ্যাক্ট ফল এই আঙ্গুর।

2-কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করতে সাহায্য করে

পায়খানা শক্ত বোঝাতে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য শব্দটি ব্যবহার করি। মেডিকেল সাইন্সের পরিভাষায় পায়খানা সপ্তাহে তিনবারের কম অথবা পরিমাণে কম, শক্ত এবং শুকনা হওয়াকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। আর এই কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে আঙ্গুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কেননা এতে রয়েছে অর্গানিক এসিড, ফাইবার, সেলুলাস ও চিনি যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়ক। কালো আঙ্গুরের ফ্ল্যাবনয়েডস, খনিজ, অরগ্যানিক অ্যাসিড কোষ্ঠকাঠিন্য এবং হজমের সমস্যা দূর করে। পাশাপাশি, দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

3-কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে

কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে যেমন: ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল এবং টোটাল কোলেস্টরল। এর মধ্যে একটা হলো উপকারী। আর তিনটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

আর, আঙ্গুরের মধ্যে টরোস্টেলবেন নামের এক ধরনের যৌগ থাকে, যা এই খারাপ কোলস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, লাল আঙ্গুরের খোসায় উচ্চমাত্রায় সাপোনিন রয়েছে। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। এটি স্থূলতা প্রতিরোধ করতে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সহায়তা করে।

4-ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

ক্যান্সার বিশ্বের কাছে একটি মরণব্যাধি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আঙ্গুর এই মরণব্যাধি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আঙ্গুরের জুসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফামিটরির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।

যা শরীরে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। আবার, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আঙ্গুরের উপাদানগুলো স্তন ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।

ইরানের স্বাস্থ্য চিকিৎসা বিষয়ক ওয়েব সাইটে প্রকাশিত একটা নিবন্ধে বলা হয়েছে, বীচিবিহীন আঙ্গুর থেকে যে কিশমিশ তৈরি হয় তাতে ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আছে । এই জাতীয় কিশমিশ আমাদের রক্তনালীগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে।

শুধু তাই নয়, আমাদের রক্তনালীগুলোর কোমলতা বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি, আঙ্গুরের বীজ ক্যান্সারের ক্ষতিকারক কোষগুলোকে বাড়তে দেয় না এবং এই কোষগুলো যাতে পুনরায় গঠিত না হয় সেই প্রক্রিয়াকেও বাধা দেয়।

5-রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে

সঠিক রক্ত ​​সঞ্চালন শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ রক্ত, শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। আর আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস শরীরে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনে সহায়ক ও ইনসুলিন বৃদ্ধি করে।

পাশাপাশি, আঙ্গুরের মধ্যে ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, লাইকোপিন এবং ডায়েটি ফাইবার সংমিশ্রণ রয়েছে। যার প্রতিটিই একটি স্বাস্থ্যকর হৃদয় বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি রক্তের লিপিড কন্টেন্ট হ্রাস করে এবং ট্রাইগ্লিসারাইড জমে যাওয়া রোধ করে এথেরোস্ক্লেরোসিসের সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে।

আঙ্গুরের রস ফ্লেভনয়েড ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটায় এবং রক্তচাপের হ্রাস বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।

6-কিডনির জন্য ভাল

মানব দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হচ্ছে কিডনি। শরীরে ছাঁকনির কাজ করে কিডনি। বিপাক ক্রিয়ার পর শরীরে থাকা বর্জ্য ও টক্সিক পদার্থকে রক্ত থেকে ছেঁকে মল-মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয় কিডনি। আর এই কিডনি ভালো রাখতে আঙ্গুর খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কারণ, আঙ্গুরের সব ভিটামিন উপাদানগুলো ক্ষতিকারক ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সহনশীল অবস্থায় রাখে। সেই সঙ্গে আমাদের কিডনির রোগ-ব্যাধির বিরুদ্ধেও কাজ করে। এ ছাড়া আঙ্গুর আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রোধ করে। তাই কিডনি ভালো রাখতে নিয়মিত আঙ্গুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

7-আঙ্গুর বার্ধক্য রোধ করতে সাহায্য করে

আঙ্গুর শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। যা বার্ধক্য রোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আবার, শরীরের ফ্রি রেডিকেলস ত্বকে বলিরেখা পড়তে সাহায্য করে। আঙ্গুরে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে।

পাশাপাশি, লাল আঙ্গুরের খোসা ও বিচিতে থাকা রেসভারেট্রোল উপাদান যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও, আঙ্গুরের উপাদান এবং খনিজগুলি পেশীর অখণ্ডতা সংরক্ষণ এবং মজবুত করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি, পেশীর ক্ষতি রোধ করতে সহায়তা করে।

8-হজমে সহায়তা করে

সুস্বাস্থ্যের জন্য হজমশক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটি বাধাগ্রস্ত হলে বা কোন ধরণের সমস্যা দেখা দিলে পুরো দেহই স্থবির হয়ে পড়তে পারে। আর আঙ্গুর হজমের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি পেটের পীড়াও দূর করে।এটি অ্যাসিড গঠন প্রতিরোধ করে এবং অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির কারণে ঘটে যাওয়া অনেক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

এছাড়াও, আঙ্গুরের মধ্যে থাকা উচ্চ পানির পরিমাণ এবং ডায়েটরি ফাইবারগুলির উপস্থিতি অন্ত্রের গতিপথ উন্নত করতেও সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে এবং একটি স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণে অবদান রাখে।

যাদের পেটে জ্বালা করে তাদের সমস্যাও সমাধান হবে আঙ্গুর খেলে। পাশাপাশি, আঙুর ‘ডিসপেপসিয়া’ রোগ দূর করতেও সাহায্য করে। ভাত খাওয়ার আধ ঘন্টা পরে আঙ্গুরের রস পান করলে কিছু দিনের মধ্যেই পেট ফাঁপা, বদহজম ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

9-ত্বকের সুরক্ষায় আঙ্গুরের উপকারিতা

সারাদিন ঘরে থাকুন অথবা কাজে বাইরে যান কোনোভাবেই ত্বকের যত্নকে অবহেলা করা যাবে না। ত্বক ভালো রাখতে নিয়মিত এর যত্ন নিতে হবে। আর, আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ফাইটো কেমিক্যাল ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট আমাদের ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষ কাজ করে।

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। আবার, আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেলস গুলো ত্বকে বলিরেখা ফেলত সাহায্য করে। আর আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের ত্বক ঠিক রাখে এবং শরীরে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে।

পাশাপাশি, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর কালো আঙ্গুর ত্বকে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। তাই, বলিরেখা, কালো ছোপ, শুষ্ক ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় বেশি বেশি কালো আঙ্গুর খেতে পারেন। আবার কাল আঙ্গুর ত্বকে লাগিয়ে 15 মিনিট পর ধুয়ে ফেললেও ভালো উপকার পাবেন।

10-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে

রোগ প্রতিষেধন নয় প্রতিরোধই সর্বোত্তম পন্থা। অর্থাৎ রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার চাইতে রোগের আক্রমণকে পরাস্ত করার ক্ষমতা জোরদার করায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আঙ্গুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

এছাড়াও, আঙ্গুরের মধ্যে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য যৌগ রয়েছে যা চর্বি সংগ্রহ এবং ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করতে অবদান রাখে। মেডিসিনাল ফুড নামক জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এক গ্লাস লাল আঙ্গুরের জুস মধ্যবয়সি মানুষের ইমিউনিটির উন্নতি করতে সাহায্য করে বহুগুনে। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত আঙ্গুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

11-স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে আঙ্গুরের উপকারিতা

অনেকে আছে যারা ছোট ছোট বিষয়গুলো দ্রুত ভুলে যান। আবার অনেক ছোট ছোট ঘটনা বেমালুম স্মৃতি থেকে মুছে যায়। এটা কিন্তু একধরনের রোগ। আর এই রোগ এড়াতে খেতে পারেন আঙুর।

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কালো আঙুরের জুড়ি মেলা ভার। এটির রাইবোফ্লাভিন শুধুই মেমোরি পাওয়ার ই বাড়ায় না বরং মাইগ্রেনের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়াও, স্মৃতির ক্ষয়রোগ বা আলঝাইমার্স রোগ সারাতেও এই আঙ্গুরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই বাচ্চাদের ছোট থেকে পড়া নয়নে রাখতে ও বুদ্ধি বিকাশের জন্য এটি দিতে পারেন।

12-চুলের যত্নে বেশ উপকারী

চুলের একটু অযত্নেই আমাদের চুল খুশকিতে ভরে যায়। এছাড়াও দেখা যায় চুলের আগা ফেটে গিয়ে রুক্ষ হয়ে পড়ে, ধূসর রঙের হয়ে যায় এবং শেষমেশ চুল ঝরতে থাকে।এই সমস্ত সমস্যার সমাধানে আঙ্গুর বেশ উপকারী।

আবার, কালো আঙুরের বীজ পেস্ট করে, অলিভ অয়েলের সাথে মিশিয়ে চুলে ম্যাসাজ করতে পারেন। এই তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। আর ভিটামিন ই চুল পড়ার সমস্যা কমায় ও চুল সাদা হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে।

13-হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

হাড় ভালো রাখা আমাদের সুস্থতার জন্য অন্যতম জরুরি একটি বিষয়। এটি আমাদের শরীরকে বাহ্যিক সবরকম আঘাত থেকে রক্ষা করে। তাই হাড় শক্ত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর আঙ্গুরের মধ্যে মাইক্রো-পুষ্টি বিদ্যামান। যেখানে রয়েছে কপার, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম। এসকল উপাদান হাড় মজবুত করে এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও, আঙ্গুরের পটাসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের সুস্থ ঘনত্ব বজায় রাখতে, অস্টিওপোরোসিস এবং আর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং শিশুদের সুস্থ হাড় গঠনে সহায়তা করে।পাশাপাশি, আঙুরে প্রচুর পরিমাণে তামা, লোহা ও ম্যাংগানিজের মতো খনিজ পদার্থ থাকে যা হাড়ের গঠন ও হাড় শক্ত করতে কাজ করে।

আবার, চল্লিশ এর কোঠা পেরোলেই মেয়েদের হাড়ের ক্ষয় শুরু হয় যা মেনোপজ অব্দি চলে। এইসময় কালো আঙ্গুর খাওয়া খুবই লাভজনক। এতে থাকা প্রভূত মিনারেল ক্যালসিয়াম ও আয়রন বোন ডেন্সিটি বাড়ায়। হাড়ের গঠন সামঞ্জস্য ও জয়েন্ট ফ্লুইডিটি এমনকি স্নায়ুর স্টিমুলেসন ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে।

আঙ্গুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা

সতর্কবার্তা

আঙ্গুরের উপকারিতা অনেক। তারপরও, আঙ্গুর অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। আঙ্গুর ফল যদিও ওজন হ্রাস করতে পারে, তবে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বাড়তেও পারে। এটি গ্যাস বা ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।

যদি কারও অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাহলে তাকে আঙ্গুর থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তারের কাছে পরামর্শ করে আঙ্গুর খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত আঙ্গুর খেলে বমিভাব বা বদহজমও হতে পারে।

আঙ্গুর খাওয়ার উপকারিতা

সামারি

ফলের রানি বলা হয় আঙুরকে। লাল, কালো কিংবা সবুজ, যেমনই হোক না কেন, উপকারিতার দিক দিয়ে সব আঙুরই সমান। তাছাড়া আঙ্গুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ম্যাংগানিজের মতো খনিজ পদার্থ থাকে, যা হাড়ের গঠন ও হাড় শক্ত করতে কাজ করে।

আঙ্গুরের ঔষধি গুণের কারণে এটি অ্যাজমার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে এবং ফুসফুসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ায়। আঙ্গুরের ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের সহায়ক ও ইনসুলিন বৃদ্ধি করে। এক কথায় আমরা বলতে পারি স্বাস্থ্য রক্ষায় আঙ্গুরের উপকারিতা অনেক।

2 thoughts on “আঙ্গুরের খুব গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি স্বাস্থ্য উপকারিতা”

Leave a Comment